পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে সহিংস বিক্ষোভ: পুলিশসহ নিহত ১২, আহত ২০০

পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে খাদ্য, বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন সেবায় সরকারি ভর্তুকির দাবিতে শুরু হওয়া বিক্ষোভ সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। টানা চতুর্থ দিনের মতো চলা এই বিক্ষোভে পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংঘর্ষে তিনজন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন দুই শতাধিক মানুষ।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করেছেন বলে বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আফজলের মতে, অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় অবরোধ ও ভাঙচুর ঠেকাতে আসা পুলিশের ওপর হামলা চালালে সহিংসতার সূত্রপাত হয়। তিনি তিনজন পুলিশ সদস্য ও একজন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া, লাঠি ও পাথরের আঘাতে গুরুতর জখম হয়ে অন্তত আটজন পুলিশ কর্মকর্তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, বিক্ষোভকারীরা পুলিশ সদস্যদের মারধর, লাঠি দিয়ে পেটানো এবং পাথর নিক্ষেপ করছে। এমনকি পুলিশের ইউনিফর্ম ছিঁড়ে ফেলার দৃশ্যও দেখা গেছে। যদিও পুলিশের দাবি, প্রাণহানি এড়াতে তারা সর্বোচ্চ সংযম দেখিয়েছে এবং পাল্টা গুলি চালায়নি। তবে মুজাফফরাবাদের একটি সেতুর ওপর দাঙ্গা পুলিশকে বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে টিয়ার গ্যাস ছুড়তে দেখা গেছে।

সোমবার পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন শহর থেকে হাজার হাজার মানুষ আঞ্চলিক রাজধানী মুজাফফরাবাদে সমবেত হয়ে এই বিক্ষোভ শুরু করে।

পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মিরের প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী আনোয়ারুল হক ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তার প্রশাসন বিক্ষোভকারীদের ৯০ শতাংশ দাবি মেনে নিয়েছে। এর মধ্যে বিদ্যুতের শুল্ক কমানো, স্থানীয় সরকার সংস্কার এবং আটক বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে তিনি উল্লেখ করেন, মন্ত্রীর সংখ্যা কমানো এবং কাশ্মিরি শরণার্থীদের জন্য সংরক্ষিত আসন বাতিলের মতো দাবিগুলো পূরণের জন্য আইন প্রণয়ন প্রয়োজন।