ফ্লোটিলার কর্মীদের ‘সন্ত্রাসী’ বলায় ইসরায়েলি মন্ত্রীর তীব্র নিন্দা

গাজায় ত্রাণবাহী নৌবহরের আটক কর্মীদের ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দেওয়ায় ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভিরের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে গাজার অবরোধ ভাঙার আন্তর্জাতিক কমিটি। শুক্রবার এক বিবৃতিতে কমিটি জানায়, আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে আটক অর্ধশত দেশের কর্মীদের সামনে ইসরায়েলি মন্ত্রীর এমন আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া ওই বিবৃতিতে কমিটি বলেছে, ‘গণহত্যাকারী অপরাধীদের জন্য তাদের মন্ত্রীকে প্রহরীদের নিয়ে বিশ্বের ৫০টি দেশের কর্মীদের সামনে দম্ভভরে ঘুরে বেড়ানোর জন্য পাঠানো আশ্চর্যজনক নয়।’ কমিটি আরও যোগ করে, ‘আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, সেই মুহূর্তের চিত্র নিয়ন্ত্রণে রাখা সত্ত্বেও তারা (ইসরায়েল) অংশগ্রহণকারীদের মুখ থেকে ‘ফিলিস্তিনের মুক্তি চাই’ স্লোগান শোনা ছাড়া ২৫ সেকেন্ডের বেশি ধারণ করতে পারেনি।’

কমিটির মতে, ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কর্মীদের এই স্লোগান বেন-গভিরের ‘কানে তালা ধরিয়ে দিয়েছে’। গাজার দিকে মাসব্যাপী যাত্রার সময় কর্মীরা যে দৃঢ়তা ও প্রতিরোধের মনোভাব দেখিয়েছেন, আটকের পরও একই মনোভাব বজায় রাখায় তাদের প্রশংসাও করা হয় বিবৃতিতে। কমিটি তাদের বক্তব্য শেষ করে এই বলে, ‘ফিলিস্তিনকে মুক্ত করো। গণহত্যা বন্ধ করো। অবরোধ ভেঙে দাও।’

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক জলসীমায় ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নামের ওই নৌবহরের ওপর হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এসময় তারা ৪৪টি নৌকার বেশিরভাগই জব্দ করে এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাড়ে চার শতাধিক কর্মীকে আটক করে। ফ্লোটিলাটি গাজার ওপর ইসরায়েলি অবরোধ ভাঙা এবং মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছিল।

ইসরায়েল প্রায় ১৮ বছর ধরে গাজাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে, যেখানে প্রায় ২৪ লাখ মানুষের বসবাস। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় ৬৬ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা এবং মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বারবার সতর্ক করেছে যে, ব্যাপক ক্ষুধা ও রোগের বিস্তারের কারণে গাজা বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে।