গাজার পথে ত্রাণবহরে বেলজিয়ামের সংসদ সদস্য, চাইলেন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

গাজার ফিলিস্তিনি ছিটমহলে চলমান ‘গণহত্যা’ বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বেলজিয়ামের সংসদ সদস্য বেনেডিক্ট লিনার্ড। অবরুদ্ধ এই অঞ্চলের জন্য ত্রাণবাহী ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা’ নামক নৌবহরে যোগ দিয়ে তিনি এই আহ্বান জানান। রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিষ্ক্রিয়তায় হতাশ হয়ে তিনি এই মিশনে অংশ নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

ফ্লোটিলার অন্যতম জাহাজ ‘গাজা সানবার্ড’ থেকে সংবাদ সংস্থা আনাদোলুকে তিনি বলেন, ‘আমি গাজায় গণহত্যা বন্ধের চেষ্টায় সরাসরি কোনো পদক্ষেপ নিতে চেয়েছিলাম’। তিনি আরও জানান, সংসদ ও সরকারগুলো যথেষ্ট পদক্ষেপ না নেওয়ায় তিনি এখন অন্য অনেক সাধারণ নাগরিকের সঙ্গে এই নৌবহরে যোগ দিয়েছেন।

লিনার্ড বলেন, এই নৌবহরের উদ্দেশ্য শুধু মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া নয়, বরং গাজার জন্য একটি স্থায়ী সমুদ্রপথ চালু করা। তিনি বলেন, ‘আমার জন্য শুধু জাহাজে থাকাই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং ইসরায়েল সেখানকার সব নাগরিক ও শিশুর সঙ্গে যা করছে, তা বন্ধ করার চেষ্টা করাও জরুরি।’

এই যাত্রার ঝুঁকি সম্পর্কেও কথা বলেন লিনার্ড। তিনি উল্লেখ করেন, বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক জলসীমায় ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে ‘সুমুদ’ নামে আরেকটি জাহাজ আটক হয়েছিল। সে সময় ইসরায়েলি নৌবাহিনী গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টাকারী ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র জাহাজগুলোতে হামলা চালিয়ে সেগুলো জব্দ করে এবং ৫০টিরও বেশি দেশের ৪৭০ জনের বেশি কর্মীকে আটক করে।

লিনার্ড বলেন, ‘আমরা আশঙ্কা করছি, আমাদের সঙ্গেও এমনটা ঘটতে পারে, কিন্তু আমরা এই মিশন শেষ করার চেষ্টা করতে চাই।’ তিনি আরও যোগ করেন, তার সহকর্মীরা ‘বেশ ভালো আছেন’ এবং তারা ‘গাজা থেকে খুব দূরে নেই।’

বিশ্ব নেতাদের উদ্দেশে লিনার্ড সরাসরি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘দয়া করে ইসরায়েল এবং গাজার এই অবৈধ অবরোধ বন্ধ করুন। মানুষ মারা যাচ্ছে। আপনাদের অবশ্যই পদক্ষেপ নিতে হবে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে। এখনই সময়, যদিও অনেক দেরি হয়ে গেছে।’

উল্লেখ্য, ইসরায়েল প্রায় ১৮ বছর ধরে গাজা ভূখণ্ডে অবরোধ বজায় রেখেছে, যেখানে প্রায় ২৪ লাখ মানুষের বসবাস। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে এই ছিটমহলে ৬৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। তীব্র অবরোধের কারণে গাজা দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে এবং বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।