কোম্পানি করদাতাদের উৎসে কর ১৫%, বাণিজ্যিক গাড়ির কর চূড়ান্ত

কোম্পানি করদাতাদের জন্য সিকিউরিটিজের সুদের ওপর উৎসে করের হার বাড়ানো হয়েছে। একইসঙ্গে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত মোটরযানের অগ্রিম করকে চূড়ান্ত করদায় হিসেবে গণ্য করার বিধান চালু করা হয়েছে। অর্থ সংক্রান্ত বিভিন্ন আইনে এমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরিবর্তন এনে ‘অর্থ সংক্রান্ত কতিপয় আইন (দ্বিতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে সরকার।

সোমবার, ৬ অক্টোবর, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এই অধ্যাদেশ জারি করেন। সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে তিনি এ অধ্যাদেশ প্রণয়ন করেন, যা ইতোমধ্যে বাংলাদেশ গেজেটের অতিরিক্ত সংখ্যায় প্রকাশিত হয়ে অবিলম্বে কার্যকর হয়েছে।

নতুন অধ্যাদেশ অনুযায়ী, আয়কর আইন, ২০২৩-এর ধারা ১০৬ সংশোধন করে সিকিউরিটিজের সুদের ওপর উৎসে করের হার পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন থেকে কোম্পানি করদাতাদের ক্ষেত্রে এই হার হবে ১৫ শতাংশ এবং কোম্পানি নয় এমন অন্যান্য করদাতাদের জন্য ১০ শতাংশ। আগে উভয় ক্ষেত্রেই এ হার ছিল ১০ শতাংশ। ফলে কোম্পানিগুলোর জন্য উৎসে কর ৫ শতাংশ পয়েন্ট বেড়েছে।

এছাড়া, আয়কর আইনের ১৬৩ ধারার ১১ উপধারায় আনা সংশোধনীতে বলা হয়েছে, বাণিজ্যিকভাবে পরিচালিত মোটরযান থেকে আদায় করা অগ্রিম কর সংশ্লিষ্ট বছরের জন্য চূড়ান্ত করদায় হিসেবে বিবেচিত হবে। তবে যদি করদাতার মোটরযান থেকে অর্জিত আয় অগ্রিম করের ভিত্তিতে নির্ধারিত আয়ের চেয়ে বেশি হয়, সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত আয়ের ওপর নিয়মিত হারে কর পরিশোধ করতে হবে। এই সুবিধা শুধু বাণিজ্যিক যানবাহনের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে।

অধ্যাদেশে মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২-তেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন বিধান অনুযায়ী, সরকার এখন থেকে গেজেট প্রজ্ঞাপন বা বিশেষ আদেশের মাধ্যমে যেকোনো পণ্য বা সেবাকে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট), সম্পূরক শুল্ক বা অগ্রিম কর থেকে অব্যাহতি দিতে পারবে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এর ফলে কর প্রশাসনে আরও নমনীয়তা আসবে।

যেহেতু বর্তমানে সংসদ বিলুপ্ত, তাই উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনার জন্য রাষ্ট্রপতি এই অধ্যাদেশ জারি করেছেন বলে গেজেটে উল্লেখ করা হয়েছে। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. হাফিজ আহমেদ চৌধুরী অধ্যাদেশটিতে সই করেছেন। কর বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পরিবর্তনের ফলে রাজস্ব আহরণে স্বচ্ছতা বাড়বে এবং কর সংক্রান্ত বিভিন্ন অস্পষ্টতা দূর হবে।