অচলাবস্থা কাটল ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে

এক যাত্রীকে লাঞ্ছিত করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট পাল্টাপাল্টি অবরোধে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অচল থাকার পর স্বাভাবিক হয়েছে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের যান চলাচল। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিবদমান পক্ষগুলো সরে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এই অচলাবস্থা নিরসনে ইউনাইটেড সার্ভিসের ১৬টি বাস চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শনিবার বিকাল ৫টার দিকে এ পথে পুনরায় যান চলাচল শুরু হয়।

ঘটনার সূত্রপাত হয় শুক্রবার সন্ধ্যায়। ‘সি’ ক্যাটাগরির জুলাইযোদ্ধা আবু রায়হান নামে এক যাত্রী অভিযোগ করেন, মাসকান্দা বাস টার্মিনালে ইউনাইটেড পরিবহনের একটি বাসে ওঠার সময় স্টাফরা তাকে লাঞ্ছিত করে ও কলার চেপে ধরে ধাক্কা দেয়। তিনি বাস কাউন্টারে অভিযোগ করতে গেলে তাকে রেখেই বাসটি চলে যায়। এ ঘটনার পর ফেসবুকে লাইভ করলে তার সহযোদ্ধারা সেখানে উপস্থিত হন।

এর প্রতিবাদে শুক্রবার রাত থেকেই জুলাইযোদ্ধা ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাকর্মীরা ইউনাইটেড গাড়ির কাউন্টার ঘেরাও করে। পরদিন শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তারা মাসকান্দা বাস টার্মিনালে আনুষ্ঠানিক অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে। তাদের ব্যানারে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আমিনুল হকের ছবি ব্যবহার করে তার মালিকানাধীন সব পরিবহন বন্ধ এবং তাকে গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়। এছাড়া যাত্রীদের হয়রানি বন্ধ ও উৎসবের সময় ভাড়া বৃদ্ধি না করার দাবিও তোলেন তারা।

এনসিপির কর্মসূচির প্রতিক্রিয়ায় দুপুর ১২টার দিকে পরিবহনশ্রমিকরা পাল্টা অবস্থান নেয়। তারা ময়মনসিংহ-ঢাকা সড়কের দীঘারকান্দা বাইপাস এলাকা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করলে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে মহাসড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয় এবং সাধারণ যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম, পুলিশ সুপার এবং মোটর মালিক সমিতির নেতারা উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। দীর্ঘ আলোচনার পর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আমিনুল হকের মালিকানাধীন ইউনাইটেড সার্ভিসের ১৬টি বাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়াও অভিযুক্ত ম্যানেজারকে প্রত্যাহার এবং হয়রানির সঙ্গে জড়িত কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করার আশ্বাস দেওয়া হয়। ময়মনসিংহ মহানগর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাবেক সদস্যসচিব আল নূর মোহাম্মদ আয়াস জানান, প্রশাসনের আশ্বাসের ভিত্তিতে তারা অবস্থান কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন।

ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম জানান, ইউনাইটেড সার্ভিসের ১৬টি বাস বন্ধের সিদ্ধান্তে উভয় পক্ষ তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছে। জেলা মোটর মালিক সমিতির সভাপতি আলমগীর মাহমুদ আলম বলেন, ‘ডিসি ও এসপি গিয়ে আলোচনা করেছেন। এনসিপির লোকজন যে দাবিগুলো দিয়েছেন, তার সবই মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে’।