জার্মানির সর্বোচ্চ আদালতে ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানি চ্যালেঞ্জ

ইসরায়েলে জার্মানির অস্ত্র রপ্তানির বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে দেশটির সর্বোচ্চ সাংবিধানিক আদালতে একটি অভিযোগ দায়ের করেছে ফিলিস্তিনিদের একটি দল। সোমবার তাদের আইনজীবীরা এক বিবৃতিতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ফিলিস্তিনি ও জার্মান মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সহায়তায় গাজার পাঁচজন বাদী এই মামলাটি দায়ের করেছেন বলে ইউরোপীয় সাংবিধানিক ও মানবাধিকার কেন্দ্র (ইসিসিএইচআর) জানিয়েছে।

ইসিসিএইচআর-এর বিশেষজ্ঞরা এক বিবৃতিতে বলেন, ‘যতদিন জার্মান সরকার ইসরায়েলে এমন অস্ত্র সরবরাহের অনুমোদন দেবে যা গাজায় ব্যবহার হতে পারে, ততদিন তারা তাদের সাংবিধানিক সুরক্ষা দায়িত্ব ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করবে।’

তারা জোর দিয়ে আরও বলেন, ‘জার্মান সরকারকে অবশ্যই তার দায়িত্ব পালন করতে হবে। আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের ঝুঁকি থাকলে ইসরায়েলে কোনো অস্ত্র রপ্তানি করা যাবে না।’

গত দুই বছরে স্থানীয় ও আঞ্চলিক আদালতে একই ধরনের আইনি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর এই অভিযোগটি দায়ের করা হলো। বাদীরা জার্মানির মৌলিক আইনের অধীনে তাদের জীবন ও শারীরিক সুরক্ষার মৌলিক অধিকারের পাশাপাশি কার্যকর আইনি সুরক্ষা পাওয়ার অধিকারের কথা উল্লেখ করেছেন।

ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ চাপের মুখে জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎস-এর জোট সরকার গত আগস্টে ঘোষণা করেছিল যে, তারা গাজায় ব্যবহার হতে পারে এমন নতুন অস্ত্রের রপ্তানি অনুমোদন দেওয়া বন্ধ করবে। তবে সরকার ইতোমধ্যে অনুমোদিত অস্ত্রের সরবরাহ বন্ধ করার কোনো প্রতিশ্রুতি দেয়নি। ইসিসিএইচআর-এর মতে, জাতিসংঘ এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা গাজায় যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং গণহত্যার বিষয়ে সতর্কতা দেওয়া সত্ত্বেও পূর্বে মঞ্জুর করা অস্ত্রের চালান এখনও সরবরাহ করা হচ্ছে।

ইসিসিএইচআর-এর বিশেষজ্ঞরা তাদের বিবৃতিতে জানান, গত ১০ অক্টোবর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে ঘোষিত যুদ্ধবিরতি একটি সাময়িক স্বস্তি দিয়েছিল। তারা জোর দিয়ে বলেন, গাজার বিভিন্ন অংশে ইসরায়েলি সামরিক হামলা অব্যাহত রয়েছে এবং ইসরায়েল এখনও গাজা ভূখণ্ডের বিশাল একটি অংশ দখল ও নিয়ন্ত্রণ করার পরিকল্পনা করছে।

ইসিসিএইচআর-এর মহাসচিব ভলফগ্যাং ক্যালেক বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চুক্তিটি গাজায় ইসরায়েলি সরকারের গণহত্যামূলক যুদ্ধকে বাধাগ্রস্ত করেছে। তবে, তাদের অতীতের অপরাধগুলোর যথাযথ বিচার হয়নি, কিংবা নেতানিয়াহুর সরকার ভবিষ্যতে ফিলিস্তিনিদের মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার কোনো প্রতিশ্রুতিও দেয়নি। এমন পরিস্থিতিতে জার্মানির মৌলিক আইন এবং আন্তর্জাতিক আইন উভয়ই ইসরায়েলে জার্মান অস্ত্র সরবরাহ নিষিদ্ধ করে।’