জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জোবায়েদ হত্যার দুই দিন পর মামলা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) পরিসংখ্যান বিভাগের ছাত্র ও ছাত্রদল নেতা মো. জোবায়েদ হোসেন হত্যার ঘটনায় অবশেষে মামলা হয়েছে। রক্তাক্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধারের দুই দিন পর এ মামলা দায়ের করা হয়।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকালে নিহতের বড় ভাই এনায়েত হোসেন সাঈকাত ঢাকার বংশাল থানায় মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মালিক আহসান উদ্দিন সামি।

এ ঘটনায় মাহির রহমান (১৯), বার্জিস শাবনাম বর্ষা (১৮) ও ফারদীন আহম্মেদ আয়লানকে (২০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. আশরাফ হোসেন তিনজনের- যার মধ্যে জোবায়েদের ছাত্রী বার্জিস শাবনাম বর্ষার বিবৃতি রেকর্ডের আবেদন করেন।

গত রবিবার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় পুরান ঢাকার আরমানিটোলার পানির পাম্প গলির একটি বাসার সিঁড়ি থেকে জোবায়েদের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

বংশাল থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, নিহত জোবায়েদ ২০১৯-২০ সেশনের ছাত্র ছিলেন এবং ছাত্রদলের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি গত এক বছর ধরে আরমানিটোলার নূরবক্স লেনের ‘রওশন ভিলা’ নামের একটি বাসায় বর্ষাকে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও জীববিজ্ঞান পড়াতেন।

নিহতের ভাই এনায়েত হোসেন অভিযোগ করে বলেন, বর্ষা, তার বাবা-মা, প্রেমিক মাহির রহমান এবং মাহির বন্ধু নাফিসে নাম উল্লেখ করে মামলা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ওসি আমাদের পরামর্শ দেন, যদি মেয়ের বাবা-মার নাম দিই তাহলে মামলা দুর্বল হবে। আমরা সেটা মানিনি; আমরা ন্যায়বিচার চাই।

এদিকে, অভিযুক্ত মাহির রহমানের মা নিজেই তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন বলে দাবি করেন মাহিরের চাচা ইমরান শেখ।

ঘটনার সময়ের সিসিটিভি ফুটেজে দুই তরুণকে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে দেখা গেছে, যদিও তাদের মুখ স্পষ্ট নয়। এ নিয়ে তদন্তে কাজ করছে পুলিশ।

ঘটনার পর জবি শিক্ষার্থীরা টাটিবাজার মোড় অবরোধ করে দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন এবং বংশাল থানার সামনে অবস্থান নেন।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে দুই দিনের শোক ঘোষণা করেছে এবং নিহত জোবায়েদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।