১৫ সেনা কর্মকর্তা আইসিটিতে হাজির না হলে পত্রিকায় সমন-গণবিজ্ঞপ্তি!

মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত ১৫ জন সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তাকে বুধবার (২২ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি) হাজির করা না হলে জাতীয় দুটি দৈনিকে তাদের নামে সমন প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম। তিনি আরও বলেন, নির্ধারিত তারিখে হাজির না হলে তাদের ‘পলাতক’ ঘোষণা করা হবে।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রসিকিউটর তামিম বলেন, ট্রাইব্যুনাল ইতোমধ্যে কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। আইজিপিকে তা বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বাহিনীর প্রধানদের কাছেও পরোয়ানার কপি পাঠানো হয়েছে।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন অনুযায়ী অভিযুক্তরা স্বেচ্ছায় হাজির হতে পারেন বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করতে পারে।

প্রসিকিউটর তামিম বলেন, যদি তারা আগামীকাল হাজির না হন বা হাজির না করা হয়, তাহলে ট্রাইব্যুনাল নতুন তারিখ নির্ধারণ করবে এবং তাদের নামে সমনসহ বিজ্ঞপ্তি দুটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশ করা হবে। এরপরও অনুপস্থিত থাকলে, ট্রাইব্যুনাল তাদের ‘পলাতক’ ঘোষণা করবে এবং রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তাদের জন্য একজন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, প্রসিকিউশন এখনো জানতে পারেনি ১৫ সেনা কর্মকর্তা গ্রেপ্তার হয়েছেন কিনা বা সেনা হেফাজতে আছেন কিনা। কারণ, ট্রাইব্যুনাল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে এবং রেজিস্ট্রার অফিস তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছে। যে কোনো তথ্য প্রথমে রেজিস্ট্রার অফিসেই পৌঁছাবে।

তামিম বলেন, আগামীকাল ট্রাইব্যুনাল জানাবে তারা কোনো তথ্য পেয়েছে কিনা। যদি জানা যায় যে পরোয়ানা কার্যকর হয়নি, তাহলে আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে হবে।

এর আগে ১১ অক্টোবর সেনা সদর দপ্তর জানিয়েছিল, জোরপূর্বক গুম ও নির্যাতনের অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানার মুখোমুখি ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে সামরিক হেফাজতে নেওয়া হয়েছে, এবং একজন নিখোঁজ রয়েছেন।

আরও আগে, ৮ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ দুটি মামলায় মোট ৩০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে, যাদের মধ্যে ছিলেন অপসারিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও।

এই পরোয়ানাগুলো পাঠানো হয় পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এবং ১২টি দপ্তরে এর মধ্যে রয়েছে সেনাপ্রধান, চিফ অব জেনারেল স্টাফ, অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল, ডিরেক্টর জেনারেল অব ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (ডিজিএফআই), ডিরেক্টর জেনারেল অব ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স (এনএসআই), আর্মড ফোর্সেস ডিভিশনের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব, মিলিটারি ইন্টেলিজেন্সের পরিচালক, পার্সোনেল সার্ভিস ডিরেক্টরেটের পরিচালক, আর্মি সিকিউরিটি ইউনিটের কমান্ড্যান্ট, প্রভোস্ট মার্শাল এবং আর্মি এমপি ইউনিটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।