গাজায় ইসরায়েলি অপরাধের বিচার চাইতে একজোট আরব আইনজীবীরা

গাজা উপত্যকা এবং ফিলিস্তিনের অন্যান্য অঞ্চলে ইসরায়েলের সংঘটিত অপরাধের বিচার চাইতে আরব আইনজীবীরা একটি আইনি জোট গঠন করেছেন। মঙ্গলবার মরক্কোর রাজধানী রাবাতে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই নতুন উদ্যোগের ঘোষণা দেওয়া হয়, যেখানে মরক্কোসহ বেশ কয়েকটি আরব দেশের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

মরক্কোর আইনজীবী এবং জোটের অন্যতম সদস্য খালিদ সেফিয়ানি সংবাদ সম্মেলনে জানান, এই উদ্যোগের লক্ষ্য হলো ইসরায়েলের দ্বারা সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ, যুদ্ধাপরাধ এবং আগ্রাসনের শিকার ভুক্তভোগীদের সমর্থন দেওয়া এবং অপরাধীদের জাতীয় (মরক্কোর) ও আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি করা।

খালিদ সেফিয়ানি বলেন, এই জোট ‘ইসরায়েল, তার সমর্থক এবং সহযোগীদের দ্বারা সংঘটিত অপরাধগুলোর প্রকৃতি নির্ধারণ ও পর্যালোচনার জন্য আইনজীবীদের মধ্যে আইনি দক্ষতা সংগঠিত করতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে কাজ করবে।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘প্রমাণ, নথি, সাক্ষীর তালিকা এবং অন্যান্য উপকরণ সংগ্রহ করাও এই জোটের অন্যতম উদ্দেশ্য, যাতে ইসরায়েল ও তার সহযোগীরা জবাবদিহির ঊর্ধ্বে থাকতে না পারে।’ তবে জোটের কার্যক্রম পরিচালনার পদ্ধতি বা কৌশলগত প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।

এই ঘোষণাটি এমন এক সময়ে এলো, যখন শুক্রবার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বিরুদ্ধে ইসরায়েলের করা আপিল দ্বিতীয়বারের মতো খারিজ করে দিয়েছে। উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি আইসিসি ফিলিস্তিনকে রোম সংবিধির একটি সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, যা গাজা ও পশ্চিম তীরসহ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে বিচারিক এখতিয়ার প্রদান করে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় ৬৮,২০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং ১,৭০,৩০০ জনের বেশিকে আহত করেছে। একই সময়ে, অধিকৃত পশ্চিম তীরেও হামলা তীব্রতর হয়েছে। ফিলিস্তিনের সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, সেখানে অন্তত ১,০৫৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত, প্রায় ১০,৩০০ জন আহত এবং ১,৬০০ শিশুসহ ২০,০০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে আটক করা হয়েছে।