কাতারে হামলা ও গাজা দখল নিয়ে মতবিরোধ, নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে বরখাস্ত করলেন নেতানিয়াহু

কাতারে হামলা ও গাজা শহর দখলের মতো গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত সিদ্ধান্তে দ্বিমত দেখা দেওয়ায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে বরখাস্ত করেছেন। মঙ্গলবার স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সাখি হানেগবি তার প্রস্থানের খবর নিশ্চিত করেছেন। ‘দ্য জেরুজালেম পোস্ট’ পত্রিকা জানিয়েছে, নেতানিয়াহু তাকে নতুন উপদেষ্টা নিয়োগের কথা জানানোর পরই জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান হিসেবে তার মেয়াদ শেষ হবে। হানেগবি গত ৭ অক্টোবরের হামলায় ইসরায়েলের ব্যর্থতার ‘পূর্ণাঙ্গ তদন্ত’ দাবি করে জানান, এ ঘটনার দায়ভার তিনিও ভাগ করে নিচ্ছেন। এদিকে, ‘ইয়েদিওত আহারোনোত’ পত্রিকা অনুসারে, নেতানিয়াহুর কার্যালয় নিশ্চিত করেছে যে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের উপ-প্রধান গিল রাইখকে সংস্থার ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

ইসরায়েলি গণমাধ্যম চ্যানেল ১২-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মাসে কাতারের রাজধানী দোহায় হামাস নেতাদের লক্ষ্য করে বিমান হামলা এবং গাজা শহর দখলের জন্য সামরিক অভিযান শুরু করা—উভয় বিষয়েই নেতানিয়াহুর সঙ্গে হানেগবির বিরোধ ছিল। অভিযান শুরুর আগে হানেগবি মন্ত্রিসভাকে জানিয়েছিলেন যে তিনি গাজা শহর নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার বিরোধিতা করছেন, কারণ এটি ইসরায়েলি জিম্মিদের জীবনকে বিপন্ন করতে পারে। চ্যানেল ১২ তাকে উদ্ধৃত করে জানায়, ‘আমি সেনাপ্রধানের (আইয়াল জামির) সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত যে গাজা শহর দখল করা জিম্মিদের জীবনকে বিপদে ফেলবে, যে কারণে আমি প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবের বিরোধিতা করছি’।

গত ৯ সেপ্টেম্বর দোহায় ইসরায়েলি হামলায় পাঁচজন হামাস সদস্য এবং একজন কাতারি নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিহত হন, যা বিশ্বজুড়ে নিন্দার জন্ম দেয়। উল্লেখ্য, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপস্থাপিত একটি পর্যায়ক্রমিক পরিকল্পনার ওপর ভিত্তি করে ১০ অক্টোবর গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়। এই পরিকল্পনার প্রথম ধাপে ফিলিস্তিনি বন্দিদের বিনিময়ে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল। এই পরিকল্পনায় হামাসবিহীন নতুন শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং গাজা পুনর্গঠনের কথাও বলা হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলমান ইসরায়েলের ভয়াবহ আগ্রাসনে ৬৮ হাজার ২০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৭০ হাজার ৩০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।