‘জাতীয় ছাত্র শক্তি’ নামে আত্মপ্রকাশ করলো গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ

গঠনের মাত্র আট মাসের মধ্যেই বিলুপ্ত হলো বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বিজিসিএস)। সংগঠনটি নতুন নামে আত্মপ্রকাশ করেছে ‘জাতীয় ছাত্র শক্তি’ হিসেবে। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) রাজধানীর আবু সাঈদ কনভেনশন হলে আয়োজিত জাতীয় সমন্বয় সভায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবু বকর মজুমদার আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা দেন।

সভায় উপস্থিত ছিলেন নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, দক্ষিণ অঞ্চলের প্রধান সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তর অঞ্চলের প্রধান সংগঠক সরজিস আলম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব, সদস্য সচিব জাহিদ আহসানসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

নতুন সংগঠনের স্লোগান নির্ধারণ করা হয়েছে- ‘শিক্ষা, ঐক্য, মুক্তি’। যদিও ‘জাতীয় ছাত্র শক্তির’ পূর্ণাঙ্গ কমিটি এখনো ঘোষণা করা হয়নি।
বিজিসিএস গঠিত হয় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি, কোটা সংস্কার ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একাংশের নেতৃত্ব থেকে। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে হতাশাজনক ফলাফলের পর সংগঠনের নেতৃত্ব পুনর্গঠনের চিন্তাভাবনা শুরু হয়। এর ধারাবাহিকতায় নতুন রূপে আত্মপ্রকাশ করেছে সংগঠনটি।

সংগঠনটির নেতা এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, আমরা জাতীয় ছাত্র শক্তি নামটি বেছে নিয়েছি বৃহত্তর সাংগঠনিক সংস্কারের অংশ হিসেবে। আরও কিছু পরিবর্তন আসছে।

তিনি আরও বলেন, নতুন সংগঠন নাগরিক পার্টির আদর্শিক মিত্র হিসেবে কাজ করবে, তবে সম্পূর্ণ স্বাধীন থাকবে। নিজেদের সিদ্ধান্ত, কর্মসূচি ও নীতিনির্ধারণ আমরা নিজেরাই করব। আমাদের নেতৃত্ব কোনো অবস্থাতেই মৌলিক নীতির সঙ্গে আপস করবে না।

বিজিসিএসের জন্ম হয়েছিল ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে, জুলাই আন্দোলনের পর গড়ে ওঠা ছাত্র রাজনীতির নতুন ধারার প্রতিনিধিত্ব করতে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের তরুণ নেতাদের নিয়ে গঠিত এই সংগঠনটি দ্রুতই রাজপথে সক্রিয় হয়ে ওঠে। তবে সংগঠনের ভেতরে নেতৃত্ব নিয়ে মতভেদ, নির্বাচনে প্রত্যাশিত ফল না পাওয়া এবং আদর্শিক অবস্থান পুনর্নির্ধারণের প্রয়োজনীয়তা থেকেই নতুন রূপে আত্মপ্রকাশের সিদ্ধান্ত আসে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সভায় নেতারা জানান, জাতীয় ছাত্র শক্তি এখন থেকে শিক্ষা, কর্মসংস্থান, ও ন্যায্য সামাজিক কাঠামো প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে দেশব্যাপী সংগঠন গড়ে তোলার পরিকল্পনা হাতে নিচ্ছে।

আবু বকর বলেন, আমাদের লক্ষ্য শুধু আন্দোলন নয়, বরং শিক্ষিত, সচেতন, ও দায়িত্বশীল নাগরিক তৈরি করা- যারা দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণে ভূমিকা রাখবে।