ফার্মগেটে মেট্রোরেল সেকশন থেকে এক নয় দুইটি বিয়ারিং প্যাড খসে পড়েছে

রাজধানীর ফার্মগেট মেট্রোরেল সেকশন থেকে এক নয়, দুইটি বিয়ারিং প্যাড পড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী প্রকৌশলীরা। রবিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে ঘটে যাওয়া এ ঘটনায় এক পথচারী নিহত হয়েছেন।

নিহতের নাম আবুল কালাম (৩৫)। তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান, যখন ভারী বিয়ারিং প্যাডগুলোর একটি ওপর থেকে পড়ে তার মাথায় আঘাত হানে।

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) রক্ষণাবেক্ষণ টিমের এক প্রকৌশলী গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা উপরে গিয়ে দেখি দুটি স্প্রিং প্যাডই অনুপস্থিত। একটি উদ্ধার করা গেলেও অন্যটি পাওয়া যায়নি। এখন উপরের ডায়াফ্রামটি কলামের ওপর সরাসরি ভর করছে, কারণ প্যাড দুটি পড়ে গেছে।

ঘটনার পর দুপুরে ডিএমটিসিএলের রক্ষণাবেক্ষণ দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরে সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফওজুল কবির খানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

দুটি প্যাডের মধ্যে প্রথমটি ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। প্রকৌশলীরা উপরে উঠে ডায়াফ্রাম অংশে প্রবেশ করে পরিস্থিতি মূল্যায়ন করেন। তাদের একজন বলেন, প্যাডগুলো পুনঃস্থাপন না করা পর্যন্ত এই অংশ দিয়ে পূর্ণাঙ্গভাবে ট্রেন চলাচল সম্ভব নয়।
সরকার ইতোমধ্যে ঘটনাটি তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে।

এ ধরনের ঘটনা এটি প্রথম নয়। প্রায় ১৩ মাস আগে, ২০২৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর একই এলাকায় মেট্রোরেলের একটি বিয়ারিং প্যাড পড়ে যাওয়ার ঘটনায় আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ট্রেন চলাচল ১১ ঘণ্টার জন্য বন্ধ ছিল। সেই সময়ও নকশাগত ত্রুটি ও রক্ষণাবেক্ষণে গাফিলতির অভিযোগ ওঠে।

বিয়ারিং প্যাড মূলত রেল ভায়াডাক্টের বাঁকানো অংশে স্থাপন করা হয়, যেখানে ট্রেনের অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়। এগুলো ট্রেনের ওজন ধারণের পাশাপাশি কম্পন, ধাক্কা ও দিক পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট পার্শ্বচাপ শোষণ করে কাঠামোর ভারসাম্য রক্ষা করে।

এ ধরনের প্যাড যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে তা কাঠামোর ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে, যা পিলার বা জয়েন্টে ফাটল ধরাতে পারে, এমনকি বড় ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়ায়।

প্রকৌশলীরা মনে করছেন, ফার্মগেটের বাঁকানো অংশে প্যাড পড়ে যাওয়ায় এই সেকশনটি এখন কাঠামোগতভাবে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।