আইএমএফের সন্তুষ্টি বাংলাদেশের রিজার্ভ-মুদ্রাস্ফীতিতে, রাজস্ব আহরণে উদ্বেগ

বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অগ্রগতিতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। তবে সংস্থাটি রাজস্ব আহরণের দুর্বলতা এবং কর-জিডিপি অনুপাত নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে।

বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানী ঢাকায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে আইএমএফের পঞ্চম রিভিউ মিশনের প্রথম দিনের আলোচনায় এসব পর্যবেক্ষণ উঠে আসে। ক্রিস পাপাগিওর্জিয়ুর নেতৃত্বাধীন মিশনটি ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থান করবে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক নির্বাহী পরিচালক জানান, আইএমএফ বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সন্তোষ প্রকাশ করেছে।

তিনি বলেন, তাদের নির্ধারিত মানদণ্ড অনুযায়ী সেপ্টেম্বর মাসের জন্য নেট রিজার্ভের লক্ষ্য ছিল ১৮ বিলিয়ন ডলার এবং ডিসেম্বরের জন্য ১৯.৯ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে আমাদের নেট রিজার্ভ ২০.৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মুদ্রাস্ফীতি কিছুটা কমেছে, এ তথ্য আইএমএফ প্রতিনিধিদের জানানো হয়েছে। তারা এ অগ্রগতি স্বীকার করলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সতর্ক থেকে কড়াকড়ি মুদ্রানীতি অব্যাহত রাখার পরামর্শ দিয়েছে।

তবে বৈঠকে আইএমএফ প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের রাজস্ব আহরণে ধীরগতির বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা জানান, কর-জিডিপি অনুপাত দীর্ঘদিন ধরেই দেশের অন্যতম কাঠামোগত দুর্বলতা, যা আর্থিক সক্ষমতা সীমিত করছে।

এ ছাড়াও, চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নেও ধীরগতির বিষয়ে সংস্থাটি উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং উন্নয়ন ব্যয় ত্বরান্বিত করতে সরকারের পরিকল্পনা জানতে চায়।

দিনের প্রথম দিকে আইএমএফ কর্মকর্তারা অর্থ সচিব খায়রুজ্জামান মজুমদারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন এবং পরে অর্থ বিভাগের ম্যাক্রোইকনোমিক ও বাজেট উইংয়ের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন।

বৈঠকে রাজস্ব ঘাটতির কারণ, তা পোষাতে দেশীয় ও বৈদেশিক ঋণ বৃদ্ধির পরিকল্পনা আছে কি না তা জানতে চান আইএমএফ প্রতিনিধিরা।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, প্রথম দিনের আলোচনায় সামগ্রিক ম্যাক্রোইকনোমিক পরিস্থিতি ও রাজস্ব কর্মক্ষমতা নিয়ে প্রাথমিক মূল্যায়ন করা হয়েছে। পরবর্তী দিনগুলোতে আরও বিস্তারিত আলোচনা হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ব্যাংক খাতের স্থিতিশীলতা, ঝুঁকিনির্ভর তদারকি, তারল্য সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা এবং একীভূত ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থার ওপরও বিস্তারিত আলোচনা হয়।