গণভোট নিয়ে এক সপ্তাহে ঐকমত্যে পৌঁছানোর আহ্বান, নইলে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে

গণভোটের সময় ও বিষয়বস্তু নির্ধারণসহ ‘জুলাই সনদ’ এর সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতপার্থক্য দ্রুত নিরসনের আহ্বান জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। দলগুলোকে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে এক সপ্তাহের মধ্যে সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা দিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় সরকার নিজেই সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানানো হয়েছে।

সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

ড. আসিফ নজরুল বলেন, আজ উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি সভায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) আদেশের চূড়ান্তকরণ এবং এতে উল্লেখিত গণভোট আয়োজন নিয়ে আলোচনা হয়। কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলো বহু বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে, এজন্য আমরা কৃতজ্ঞতা জানাই। তবে কিছু সংস্কার প্রস্তাব ও গণভোটের সময় ও বিষয়বস্তু নিয়ে মতভেদ থেকে গেছে।

তিনি বলেন, এই মতপার্থক্য নিরসনে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া এখন জরুরি। কারণ, জুলাই সনদের বাস্তবায়ন ও আসন্ন সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে।

ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের দীর্ঘদিনের মিত্র রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা দিতে বলা হয়েছে। ঐকমত্য হলে সরকারের পক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হবে, বলেন আইন উপদেষ্টা।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা কোনো আল্টিমেটাম দিইনি। এটি একটি আহ্বান মাত্র। তবে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে না পৌঁছালে সরকার প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে।

তিনি আরও বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে নতুন করে আর কোনো আলোচনা আয়োজন করা হবে না।

সরকার ইতিমধ্যে বহুবার আলোচনা করেছে, তাই এবার রাজনৈতিক দলগুলোর নিজেরাই উদ্যোগ নিতে হবে, বলেন তিনি।

ড. আসিফ নজরুল বলেন, সভায় ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে সংসদ নির্বাচন আয়োজনের সরকারের সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে। এখন সময়ক্ষেপণের সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, এক রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে আলোচনার আহ্বান এসেছে, সরকার সেই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে।

সম্প্রতি জুলাই সনদ বাস্তবায়নের রূপরেখা, গণভোটের সময় নির্ধারণ ও সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

উল্লেখযোগ্যভাবে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রায় ১৫ মাসে এটিই প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রথম সংবাদ সম্মেলন।

এর আগে সাধারণত প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং ফরেইন সার্ভিস একাডেমি বা তার সরকারি বাসভবন ‘যমুনায়’ ব্রিফিং আয়োজন করে আসছিল।