নিউইয়র্কের নির্বাচন ঘিরে ট্রাম্পের হুমকি, তহবিল কাটার হুঁশিয়ারি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জোহরান মামদানি নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচিত হলে শহরটির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের বরাদ্দ কঠোরভাবে সীমিত করা হবে। আজ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে ট্রাম্পের এই হুমকিতে রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বেড়েছে।

সোমবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প লেখেন, ‘যদি কমিউনিস্ট প্রার্থী জোহরান মামদানি নিউইয়র্কের মেয়র হন, তাহলে আমি এই শহরের জন্য আইন অনুযায়ী ন্যূনতম কেন্দ্রীয় সহায়তা ছাড়া আর কিছু দেবো না।’ তিনি আরও বলেন, ‘কমিউনিস্ট নেতৃত্বে শহরটির টিকে থাকা বা উন্নতির কোনো সম্ভাবনাই নেই। কোনো কমিউনিস্ট শহরটির হাল ধরলে পরিস্থিতি কেবল খারাপই হবে।’

জোহরান মামদানি কুইন্সের ৩৬তম ডিস্ট্রিক্ট থেকে নির্বাচিত নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলির একজন সদস্য। তিনি আবাসন সংস্কার, গণপরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং সমাজকল্যাণমূলক বিভিন্ন নীতির পক্ষে সোচ্চার। মামদানি নিজেকে ‘গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রী’ হিসেবে পরিচয় দিলেও, ট্রাম্প ও অন্যান্য রক্ষণশীলরা তাকে ‘কমিউনিস্ট’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে আসছেন।

এমন এক সময়ে ট্রাম্প এই মন্তব্য করলেন, যখন নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচন একেবারে চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এরই মধ্যে প্রারম্ভিক ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে এবং ৫০ লাখের বেশি নিবন্ধিত ভোটার আজ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। জনমত জরিপে মামদানি সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমো এবং রিপাবলিকান প্রার্থী ও গার্ডিয়ান অ্যাঞ্জেলসের প্রতিষ্ঠাতা কার্টিস স্লিওয়ার চেয়ে এগিয়ে আছেন। উল্লেখ্য, ২০২১ সালে যৌন হয়রানির অভিযোগে গভর্নরের পদ থেকে সরে দাঁড়ানো কুওমো এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

ট্রাম্প তার পোস্টে আরও দাবি করেন, রিপাবলিকান প্রার্থী স্লিওয়াকে ভোট দেওয়া হলে তাতে মামদানিই সুবিধা পাবেন। তাই তিনি তার সমর্থকদের কুওমোকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ট্রাম্প বলেন, ‘আপনি অ্যান্ড্রু কুওমোকে পছন্দ করুন বা না-ই করুন, এখন তাকেই ভোট দিতে হবে, এটাই একমাত্র উপায়। আপনাদের তার জন্যই ভোট দিতে হবে এবং আশা করতে হবে যে তিনি দারুণ কাজ করবেন।’

গত ২৪ জুন প্রাইমারি নির্বাচনে মামদানির বিস্ময়কর জয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অবাক করে দেয়। এরপর তিনি সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও গভর্নর ক্যাথি হোকুলের মতো দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সমর্থন লাভ করেন। তার ঘোষিত নীতিগুলোর মধ্যে ধনীদের ওপর করারোপ, করপোরেট কর বৃদ্ধি, বাড়িভাড়া স্থগিত রাখা এবং সরকারি আবাসন প্রকল্প সম্প্রসারণের মতো বিষয়গুলো শহরের আর্থিক খাতের কর্তাব্যক্তিদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে। এছাড়া, মামদানি গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের একজন কট্টর সমালোচক হিসেবে পরিচিত, যা তাকে রিপাবলিকানদের আক্রমণের অন্যতম লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে।