কাটল ৭৮ ঘণ্টা, নিবন্ধন না মেলা পর্যন্ত সরবেন না তারেক

নিজেদের রাজনৈতিক দল ‘আমজনতার দল’-এর নিবন্ধন না পাওয়ায় নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রধান ফটকের সামনে আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন দলটির সদস্য সচিব তারেক রহমান। এরই মধ্যে তার অনশন ৭৮ ঘণ্টা অতিক্রম করেছে এবং তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে। শুক্রবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সামনে গিয়ে দেখা যায়, তারেক রহমানের হাতে স্যালাইন লাগানো রয়েছে।

অনশনরত অবস্থায় থাকলেও নিজের দাবিতে তিনি অটল। নিবন্ধন না পাওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তিনি। তারেক রহমানকে ঘিরে উৎসুক জনতার ভিড় দেখা যায়। তিনি তার দলের কাগজপত্র সবাইকে দেখিয়ে নিবন্ধন না পাওয়ার কারণ জানতে চাইছেন। অনেকে তার ছবি তুলছেন ও ভিডিও করছেন।

তারেক রহমান জানান, ইসির পক্ষ থেকে একজন উপসচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা তার সঙ্গে কথা বলতে এসেছিলেন। তিনি অনশন ভাঙার অনুরোধ করলে তারেক তাকে পাল্টা প্রশ্ন করেন। তারেকের অভিযোগ, যে চিঠির ভিত্তিতে তার দলের নিবন্ধন বাতিল হয়েছে, সেই চিঠি না পড়েই ওই কর্মকর্তা এসেছিলেন। গণমাধ্যমের সামনে চিঠির বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরলে ওই কর্মকর্তা কোনো উত্তর দিতে পারেননি এবং পরে যোগাযোগ করবেন বলে চলে যান।

বৃহস্পতিবার ওই কর্মকর্তা যাওয়ার পর আর ফিরে আসেননি বলে অভিযোগ তারেকের। তিনি বলেন, ‘তারা ভেবেছিল আমি বেইজ্জতি হয়ে অনশন ভেঙে চলে যাব। কিন্তু আমার সহযোদ্ধারা ভোটের অধিকারের জন্য এতদিন লড়াই করেছে। এখন তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না, এটা আমি মানতে পারছি না।’

নিজের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমার ভেতরে অনেক কষ্ট হচ্ছে। ৭৮ ঘণ্টার মধ্যে আমি এক ফোঁটা পানিও খাইনি। কোনো শুকনো বা ভেজা খাবার গ্রহণ করিনি। আমি কীভাবে আছি, সেটা আমিই জানি।’

এদিকে তারেক রহমানের এই অনশনের সঙ্গে সংহতি জানাতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা এসেছেন। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, জাসাস, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মোটরশ্রমিক দল এবং বারোদলীয় জোটের নেতারা তার সঙ্গে দেখা করে সংহতি প্রকাশ করেছেন বলে তিনি জানান।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত পর্যালোচনা শেষে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী) ও বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টিকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এই তালিকা থেকে ‘আম জনতার দল’ বাদ পড়ায় ওইদিন বিকেল থেকেই নির্বাচন ভবনের মূল ফটকে অনশন শুরু করেন তারেক রহমান।