চীন: মন্তব্য প্রত্যাহার না করলে জাপানকে ‘পরিণতি’ ভোগ করতে হবে

তাইওয়ান ইস্যুতে জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানে তাকাইচির করা মন্তব্যকে ‘আপত্তিকর’ আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাহারের জন্য জোরালো দাবি জানিয়েছে চীন। এই দাবি না মানলে জাপানকে এর ‘যাবতীয় পরিণতি’ ভোগ করতে হবে বলেও কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে বেইজিং।

চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার বেইজিং এই দাবি জানায়। গত সপ্তাহে জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানে তাকাইচি বলেছিলেন, তাইওয়ানের বিরুদ্ধে চীনের যেকোনো সামরিক পদক্ষেপ, এমনকি নৌ অবরোধও জাপানের জন্য ‘অস্তিত্বের সংকট’ তৈরি করতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে জাপান তার ‘যৌথ আত্মরক্ষার অধিকার’ প্রয়োগ করতে পারবে। যদিও পরে তাকাইচি তার এই বক্তব্য প্রত্যাহার করতে অস্বীকার করেন। আইনপ্রণেতাদের তিনি জানান, ‘সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির’ কথা মাথায় রেখেই তিনি ওই মন্তব্য করেছেন।

এ বিষয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান বেইজিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ ধরনের ভুল কথাবার্তা এবং কর্মকাণ্ড এক-চীন নীতিকে গুরুতরভাবে লঙ্ঘন করে। এটি চীন ও জাপানের মধ্যকার চারটি রাজনৈতিক দলিলের মূল চেতনা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মৌলিক নীতির পরিপন্থী।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটি চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে চরম হস্তক্ষেপ, চীনের সার্বভৌমত্বকে ক্ষুণ্ণ করে এবং এর মূল স্বার্থকে চ্যালেঞ্জ জানায়।’

লিন সতর্ক করে বলেন, ‘চীন এর তীব্র বিরোধিতা করে এবং কখনোই এটি সহ্য করবে না। জাপানকে অবশ্যই অবিলম্বে তার ভুল সংশোধন করতে হবে এবং এই আপত্তিকর বিবৃতি প্রত্যাহার করতে হবে, অন্যথায় তাদের সব পরিণতি ভোগ করতে হবে।’ এর আগেও বেইজিং তাকাইচির মন্তব্যকে ‘ভুল এবং বিপজ্জনক’ বলে আখ্যা দিয়ে এর প্রতিবাদ জানিয়েছিল।

একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রকেও এক-চীন নীতি মেনে চলার আহ্বান জানান লিন। তিনি বলেন, ‘আমি আবারও বলতে চাই যে তাইওয়ান প্রশ্নটি চীনের মূল স্বার্থের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে এবং এটিই প্রথম লাল রেখা যা চীন-মার্কিন সম্পর্কে অতিক্রম করা উচিত নয়।’ লিন আরও জানান, তাইওয়ান প্রশ্নের সমাধান এবং জাতীয় পুনরেকত্রীকরণ চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়, যেখানে কোনো বাইরের শক্তির হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, ‘যদি জাপানি পক্ষ সামরিক উপায়ে তাইওয়ান প্রণালীর পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ করার সাহস দেখায়, তবে তা আগ্রাসন বলে গণ্য হবে এবং চীনের পক্ষ থেকে এর শক্তিশালী জবাব দেওয়া হবে।’

এদিকে, জাপানি কূটনীতিকদের কাছে তথ্য পাচারের অভিযোগে চীনা সংবাদপত্র গুয়াংমিং ডেইলির সম্পাদকীয় বিভাগের সাবেক উপ-প্রধান দং ইউয়ুকে দেওয়া সাত বছরের কারাদণ্ড বহাল রেখেছেন বেইজিংয়ের উচ্চ আদালত। ৬৩ বছর বয়সী দংকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে বেইজিংয়ে জাপানি দূতাবাসের এক কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকের পর আটক করা হয়েছিল। গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ২০২৩ সালের মার্চে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।