শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড, যেভাবে দেখছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার খবরটি বিশ্বজুড়ে প্রধান সংবাদমাধ্যমগুলোতে গুরুত্ব পেয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর এই রায় ঘোষণার পর বিবিসি, রয়টার্স, এএফপি, সিএনএন, আল-জাজিরা ও দ্য গার্ডিয়ানের মতো গণমাধ্যমগুলো তাদের অনলাইন সংস্করণ ও সম্প্রচারে এটিকে প্রধান সংবাদ হিসেবে প্রচার করে।

আজ সোমবার এই রায় ঘোষণা করা হয়। এতে শেখ হাসিনার পাশাপাশি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকেও একই সাজা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে এই বিষয়গুলো উঠে এলেও তাদের মূল আলোকপাত ছিল শেখ হাসিনার দণ্ডের ওপর।

অধিকাংশ সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে গত বছরের ছাত্র বিক্ষোভ দমনের বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে। যেমন, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি শিরোনাম করেছে, ‘নৃশংসভাবে বিক্ষোভ দমনের মামলায় বাংলাদেশের সাবেক নেতা শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড’। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই রায়ের ফলে শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের জন্য ভারতের ওপর চাপ বাড়তে পারে, যদিও এর সম্ভাবনা কম। বার্তা সংস্থা রয়টার্স শিরোনাম করেছে, ‘শিক্ষার্থীদের ওপর দমন-পীড়নের দায়ে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী হাসিনার মৃত্যুদণ্ড’।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে এই রায় এলো। রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিলের সুযোগ থাকলেও শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় না আসা পর্যন্ত তারা আপিল করবেন না।

বার্তা সংস্থা এএফপি তাদের প্রতিবেদনে আদালতের ভেতরের পরিবেশ তুলে ধরেছে। তারা জানায়, বিচারক রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত জনতা উল্লাস প্রকাশ করে। আল-জাজিরা শেখ হাসিনাকে গণ-অভ্যুত্থান দমনের ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, এই সহিংসতায় প্রায় ১ হাজার ৪০০ মানুষ নিহত হয়েছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সিএনএন এবং যুক্তরাজ্যের দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনের শিরোনামেও মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং ছাত্র বিক্ষোভে সহিংস দমনের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।

ভারতের গণমাধ্যমগুলোও এই রায়কে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস একটি প্রতিবেদনে লিখেছে, ‘শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড: এখন কী হবে’। তারা এই বিষয়টিও তুলে ধরেছে যে, শেখ হাসিনা নিজেই ২০০৯ সালে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে বিচারের জন্য এই ট্রাইব্যুনাল গঠন করেছিলেন।