পশ্চিম তীরে উত্তেজনা চরমে, হামলা-পাল্টা হামলায় নিহত ৩

ইসরায়েলি অধিকৃত পশ্চিম তীরে গাড়িচাপা ও ছুরিকাঘাতের ঘটনায় এক ইসরায়েলি নাগরিক নিহত এবং আরও তিনজন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) বেথলেহেম ও হেবরনের মধ্যবর্তী এক ব্যস্ত সড়কের কাছে এ ঘটনা ঘটে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এটিকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলে অভিহিত করেছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, হামলার পরপরই ঘটনাস্থলে থাকা দুই হামলাকারীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তাদের গাড়িতে বিস্ফোরক পাওয়া গেছে, যা বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল নিষ্ক্রিয় করেছে। এখন পর্যন্ত কোনো সংগঠন এ হামলার দায় স্বীকার করেনি।

ইসরায়েলের অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস জানিয়েছে, ছুরিকাঘাতে ৩০ বছর বয়সি এক যুবক মারা গেছেন। আহতদের মধ্যে একজন নারীর অবস্থা আশঙ্কাজনক এবং বাকি দুজনের অবস্থা স্থিতিশীল।

গাজায় যুদ্ধবিরতি চললেও পশ্চিম তীরে উত্তেজনা বেড়েই চলেছে। সেখানে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের হামলা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে বলে জানা গেছে। ফিলিস্তিনি সংবাদমাধ্যম ওয়াফার তথ্য অনুযায়ী, সোমবার বেথলেহেমের কাছে জাবা গ্রামে ইহুদি বসতি স্থাপনকারীরা ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর ও গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং এর আগে সাইর গ্রামেও একই ধরনের হামলা হয়েছিল।

এ সহিংসতা নিয়ে ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক চাপও বাড়ছে। বসতি স্থাপনকারীদের নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার সমালোচনার মুখে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সোমবার মন্ত্রিপরিষদের জরুরি বৈঠক ডাকেন। তিনি ঘোষণা দেন, ‘পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ওপর সাম্প্রতিক আক্রমণকারীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।’

ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিয়ন সা’আর সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘জুডিয়া ও সামারিয়ায় (পশ্চিম তীর) ইহুদি দাঙ্গাবাজরা ইসরায়েল রাষ্ট্রের ক্ষতি করছে, ইহুদি ধর্মের অপমান করছে এবং বসতি প্রকল্পেরও ক্ষতি করছে। তারা আমাদের প্রতিনিধিত্ব করে না। প্রতিরক্ষা বাহিনী, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা ও পুলিশকে কঠোরভাবে এ উন্মাদনা বন্ধ করতে হবে’।

জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক দপ্তর (ওসিএইচএ) জানিয়েছে, অক্টোবর মাসে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের হাতে ফিলিস্তিনিদের ওপর অন্তত ২৬৪টি হামলা হয়েছে, যা ২০০৬ সালে পর্যবেক্ষণ শুরুর পর এক মাসে সর্বোচ্চ।