অভিনব প্রতিবাদ: সাঁতরে পদ্মা পাড়ি দিতে গিয়ে ২ যুবক হাসপাতালে

ভোলা-বরিশাল রুটে একটি সেতুর দাবিতে ঢাকামুখী পদযাত্রায় অংশ নেওয়া একদল তরুণ অভিনব প্রতিবাদের পথ বেছে নিয়েছেন। হেঁটে পদ্মা সেতু পার হওয়ার অনুমতি না পেয়ে তারা সাঁতরে নদী পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেন। বুধবার বিকেলে এই দুঃসাহসিক চেষ্টার সময় দুজন অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

দ্বীপজেলা ভোলার বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি, বিশেষ করে জরুরি চিকিৎসাসেবা পেতে রোগীদের সময়মতো বরিশালে আনা-নেওয়ায় চরম দুর্ভোগ লাঘবে একটি সেতুর দাবিতে এই পদযাত্রার আয়োজন করা হয়। এই লক্ষ্যে গত ১১ নভেম্বর ভোলার চরফ্যাশন টাওয়ার থেকে ২০ জন তরুণের একটি দল ঢাকার সেতু ভবনের উদ্দেশে পদযাত্রা শুরু করে।

পদযাত্রার অষ্টম দিনে, বুধবার বিকেলে, দলটি শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে পদ্মা সেতুর কাছে পৌঁছায়। কিন্তু কর্তৃপক্ষের অনুমতি না মেলায় তারা প্রায় ৬ কিলোমিটার প্রশস্ত পদ্মা নদী সাঁতরে পার হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। দলটির ১০ জন সদস্য সাঁতার শুরু করার কিছুক্ষণ পরেই নোমান হাওলাদার ও তানজিম নামে দুজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। দ্রুত তাদের উদ্ধার করে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার পাচ্চর এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

পদযাত্রার সমন্বয়কারী মীর মোশাররফ অমি জানান, তাদের দীর্ঘদিনের দাবি সত্ত্বেও বারবার হতাশ হতে হয়েছে। তিনি বলেন, ‘২০১৩ সালে সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের কথা থাকলেও তা আজও সম্পন্ন হয়নি। প্রতিবার সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর প্রকল্পটি বাতিল করা হয়।’

আন্দোলনকারীরা আরও জানান, তিন মাস আগে উপদেষ্টাদের একটি প্রতিনিধি দল তাদের মন্ত্রণালয়ে ডেকেছিল। সে সময় ভোলার স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নসহ পাঁচ দফা দাবি মেনে নিয়ে সেতু নির্মাণের কাজ শুরুর আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই আশ্বাসের কোনো বাস্তবায়ন না হওয়ায় তারা এই কর্মসূচি নিতে বাধ্য হয়েছেন। তাদের অভিযোগ, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে সরকার দাবি বাস্তবায়নে উদ্যোগ না নিলে পরে আর কোনো পদক্ষেপ নেবে না।

তারা বলেন, ‘একটি সেতুর জন্য আমাদের ২৮০ কিলোমিটার পথ হাঁটতে হয়েছে, আরও ১০০ কিলোমিটার বাকি। এর আগে তিনটি নদী সাঁতরে এসেছি। এখন পদ্মা পাড়ি দিতে হচ্ছে। আমাদের কোনো সহযোদ্ধার কিছু হলে তার জন্য সরকার ও উপদেষ্টারাই দায়ী থাকবেন।’ তারা এই সমস্যা সমাধানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এই বিষয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গোসাইরহাট সার্কেল) শামসুল আরেফীন জানান, হেঁটে সেতু পার হওয়ার অনুমতি না থাকায় কয়েকজন যুবক নদী সাঁতরে পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, কিছুদূর যাওয়ার পর তারা বর্তমানে শরীয়তপুরের একটি চরে অবস্থান করছেন এবং বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সব বাধা সত্ত্বেও পদযাত্রা সফল করার ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ असल्याचे জানিয়েছেন আন্দোলনরত তরুণেরা।