অভ্যুত্থান ষড়যন্ত্র: বলসোনারোর ২৭ বছরের কারাদণ্ড শুরু

ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো তার ২৭ বছর তিন মাসের কারাদণ্ড ভোগ করা শুরু করেছেন। গত নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর অভ্যুত্থান ষড়যন্ত্রের দায়ে তাকে এই সাজা দেওয়া হয়। মঙ্গলবার দেশটির সুপ্রিম কোর্ট এ ঘোষণা দিয়েছে।

এই মামলার বিচারক, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আলেকজান্দ্রে দে মোরায়েস রায় দিয়েছেন, বলসোনারোকে ব্রাসিলিয়ার ফেডারেল পুলিশ কমপ্লেক্সেই রাখা হবে। তাকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বা সামরিক কারাগারে পাঠানোর আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। গত শনিবার থেকে তিনি সেখানেই আটক আছেন। বিচারক মোরায়েস জানান, সাবেক প্রেসিডেন্টের বয়স ও ভঙ্গুর স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে তাকে প্রধান পুলিশ সদর দপ্তরে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত শনিবার বলসোনারো একটি সোল্ডারিং আয়রন দিয়ে তার পায়ে লাগানো ইলেকট্রনিক অ্যাঙ্কেল ব্রেসলেট খোলার চেষ্টা করলে তাকে পুলিশ সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। রবিবার তিনি একজন সহকারী বিচারককে জানান, দীর্ঘদিনের হেঁচকির জন্য তার ওষুধ পরিবর্তন করায় তিনি স্নায়ুবৈকল্য ও মতিভ্রমের শিকার হন, যার ফলে তিনি ব্রেসলেটটি ভাঙার চেষ্টা করেন।

বলসোনারোকে পুলিশ সদর দপ্তরের একটি ১২ বর্গমিটারের কক্ষে রাখা হয়েছে। শনিবার থেকে সেখানে তার সঙ্গে স্ত্রী মিশেল বলসোনারো এবং দুই ছেলে দেখা করেছেন।

এদিকে, বলসোনারোর আইনজীবীদের করা গৃহবন্দি অবস্থায় সাজা ভোগের আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন বিচারপতি মোরায়েস। তিনি এর কারণ হিসেবে অ্যাঙ্কেল ব্রেসলেট ভাঙার চেষ্টার কথা উল্লেখ করেছেন। বিচারক এটিকে গত সপ্তাহান্তে সাবেক প্রেসিডেন্টের পালিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন।

২০২২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভার কাছে হেরে যাওয়ার পর অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্রের দায়ে গত সেপ্টেম্বরে বলসোনারোকে চূড়ান্তভাবে ২৭ বছর তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী, ওই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে প্রেসিডেন্ট লুলা এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেরাল্ডো আল্কমিনকে হত্যার পরিকল্পনাও ছিল, যদিও ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাদের সমর্থন না পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হয়নি।

এর আগেও বলসোনারো ১০০ দিনের বেশি সময় ধরে ব্রাসিলিয়ায় গৃহবন্দি ছিলেন। তার বিরুদ্ধে চলমান ফৌজদারি মামলা বন্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ চাওয়ার অভিযোগে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা লঙ্ঘনের দায়ে তাকে তখন গৃহবন্দি করা হয়েছিল।