জাতিসংঘ: গাজায় ‘সংগঠিত ও ব্যাপক’ নির্যাতন চালাচ্ছে ইসরায়েল

জাতিসংঘের নির্যাতনবিরোধী কমিটি ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডে ‘সংগঠিত ও ব্যাপক’ নির্যাতন এবং অসদাচরণের প্রমাণ পাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। শুক্রবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে কমিটি গাজায় ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়াকে ‘অসামঞ্জস্যপূর্ণ’ হিসেবে উল্লেখ করে জানায়, গত বছরের অক্টোবর থেকে এই ধরনের কর্মকাণ্ড মারাত্মকভাবে বেড়েছে।

প্রতিবেদনে কমিটি হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলাকে ‘দ্ব্যর্থহীনভাবে’ নিন্দা জানালেও ইসরায়েলের নিরাপত্তা উদ্বেগের বিষয়টি স্বীকার করেছে। তবে এর জবাবে ইসরায়েলের নেওয়া পদক্ষেপকে ‘অসামঞ্জস্যপূর্ণ’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে, যার ফলে ‘ব্যাপক প্রাণহানি ও ফিলিস্তিনি জনগণের গভীর দুর্ভোগ’ সৃষ্টি হয়েছে। কমিটি জানায়, ইসরায়েলের বিভিন্ন নীতি অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে সাধারণ মানুষের জন্য ‘নিষ্ঠুর, অমানবিক বা অবমাননাকর পরিস্থিতি’ তৈরি করেছে।

নির্যাতন ও অসদাচরণের অভিযোগ তদন্তে একটি ‘স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও কার্যকর’ তদন্ত কমিশন গঠনের জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে কমিটি। একইসঙ্গে দায়িত্বশীলদের, বিশেষ করে ‘ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের’ বিচার এবং গাজায় মানবিক সহায়তা ও কর্মীদের ‘অবিলম্বে প্রবেশের’ সুযোগ নিশ্চিত করারও দাবি জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতা এবং প্রশাসনিক আটক ‘অভূতপূর্ব মাত্রায়’ পৌঁছেছে। কমিটি ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ আইনের সমালোচনা করে বলেছে, সেখানে নির্যাতনকে স্বতন্ত্র ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয় না এবং জিজ্ঞাসাবাদের সময় অবৈধ শারীরিক চাপ প্রয়োগের ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা ‘প্রয়োজনীয়তার’ অজুহাত দেখাতে পারেন। জিজ্ঞাসাবাদের সময় ‘বিশেষ পদ্ধতির’ অব্যাহত ব্যবহারকেও উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

কমিটি ইসরায়েলকে নির্যাতনবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আইন প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলায় প্রায় ৭০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এ ছাড়া, এই সংঘাতে ১ লাখ ৭০ হাজার ৯০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন এবং ভূখণ্ডটির বেশিরভাগ এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।