সুদানে সংঘাত: একদিনে পালালো ১৬০০ মানুষ

আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) অত্যাচার ও ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তা সংকটের কারণে সুদানের দক্ষিণ কোরদোফান প্রদেশের কেরতালা শহর থেকে একদিনেই ১৬০০-এর বেশি বেসামরিক নাগরিক পালিয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) রবিবার এ তথ্য জানিয়েছে।

জাতিসংঘের এই সংস্থাটি জানায়, তাদের বাস্তুচ্যুতি পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার মাঠ পর্যায়ের দলগুলোর হিসাব অনুযায়ী, আরএসএফের সহিংসতার কারণে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় গত ২৮ নভেম্বর ১,৬২৫ জন মানুষ কেরতালা ছাড়তে বাধ্য হয়। বাস্তুচ্যুত এই মানুষেরা দালমি এলাকার বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। সংস্থাটি আরও সতর্ক করে বলেছে, ওই অঞ্চলের পরিস্থিতি এখনও অস্থিতিশীল ও উত্তেজনাপূর্ণ।

এর আগে রবিবার কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী আনাদোলু সংবাদ সংস্থাকে জানান, সুদানের সেনাবাহিনী দক্ষিণ কোরদোফানের আব্বাসিয়া তাগালির পশ্চিমে আরএসএফ এবং তাদের সহযোগী গোষ্ঠী এসপিএলএম-নর্থের সঙ্গে সংঘর্ষের পর বেশ কয়েকটি এলাকা দখল করে নিয়েছে। এর আগে শুক্র ও শনিবার সেনাবাহিনী একই প্রদেশে আরএসএফের একটি হামলা প্রতিহত করে।

দক্ষিণ কোরদোফানের বেশ কয়েকটি গ্রামে আরএসএফ ও তাদের সহযোগী এসপিএলএম-নর্থ গোষ্ঠী হামলা চালানোর পর বাস্তুচ্যুতির এই নতুন ঢেউ শুরু হয়েছে। হামলাকালে তরুণদের জোরপূর্বক বাহিনীতে ভর্তি করার জন্য অপহরণের ঘটনাও ঘটছে।

মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মতে, উত্তর, পশ্চিম ও দক্ষিণ—এই তিনটি কোরদোফান প্রদেশে সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রচণ্ড লড়াই চলছে, যার ফলে হাজার হাজার মানুষ পালাতে বাধ্য হয়েছে।

সুদানের ১৮টি প্রদেশের মধ্যে পশ্চিমাঞ্চলের দারফুর অঞ্চলের পাঁচটি প্রদেশের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে আরএসএফের হাতে, যদিও উত্তর দারফুরের কিছু উত্তরাঞ্চল এখনও সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। অন্যদিকে, রাজধানী খার্তুমসহ দক্ষিণ, উত্তর, পূর্ব ও মধ্যাঞ্চলের বাকি ১৩টি প্রদেশের অধিকাংশ এলাকাই সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদানের সেনাবাহিনী এবং আরএসএফের মধ্যে শুরু হওয়া এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৪০ হাজার মানুষ নিহত এবং ১২ মিলিয়ন মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।