রাস্তা ছাড়লেন শিক্ষার্থীরা, যান চলাচল স্বাভাবিক

প্রস্তাবিত ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’র কাঠামোগত মডেলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধ করেছে ঢাকা কলেজের উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। তাদের এই কর্মসূচির কারণে শহরের অন্যতম ব্যস্ত এই সড়কে প্রায় এক ঘণ্টা যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে, যা সাধারণ মানুষের জন্য চরম ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

সোমবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে শতাধিক শিক্ষার্থী কলেজ প্রাঙ্গণ থেকে মিছিল নিয়ে সায়েন্সল্যাব মোড়ে অবস্থান গ্রহণ করেন। তাদের অবরোধের ফলে নিউমার্কেট এলাকার মিরপুর সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রায় এক ঘণ্টা পর, বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি মেনে নেওয়ার জন্য দ্রুত ঘোষণা দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে অবরোধ তুলে নিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মূল উদ্বেগ তাদের কলেজের শতবর্ষী ঐতিহ্য ও স্বকীয়তা নিয়ে। তারা মনে করছেন, নতুন এই বিশ্ববিদ্যালয় কাঠামোর আওতায় এলে ঢাকা কলেজের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নিজস্ব পরিচিতি হারাবে। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, তাদের মতামত উপেক্ষা করে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তারা প্রস্তাবিত ‘স্কুলিং মডেল’ পদ্ধতির পরিবর্তে অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠানভিত্তিক কাঠামো চালু করার দাবি জানিয়েছেন।

এক শিক্ষার্থী বলেন, নতুন কাঠামো কার্যকর হলে প্রশাসনিক জটিলতার পাশাপাশি শিক্ষক সংকট ও অবকাঠামোগত সমস্যা আরও বাড়তে পারে। তাদের আশঙ্কা, নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গঠিত হলে কলেজগুলোর দীর্ঘদিনের ব্র্যান্ড ভ্যালু বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে।

উল্লেখ্য, সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকার সাতটি বড় সরকারি কলেজ নিয়ে একটি স্বতন্ত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গঠিত হতে যাচ্ছে। এই উদ্যোগের আওতায় রয়েছে ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ এবং সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ। উচ্চশিক্ষার মান বৃদ্ধি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর চাপ কমানোকে এই উদ্যোগের প্রধান লক্ষ্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

পুলিশের ধানমন্ডি অঞ্চলের এডিসি জিসানুল হক জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার পর তাদের ক্যাম্পাসে ফেরত পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে সড়কের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক রয়েছে এবং যান চলাচল পুনরায় শুরু হয়েছে।

ইউজিসি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে গঠিত একটি কমিটি অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি রূপরেখা প্রস্তাব করেছে। প্রস্তাবিত খসড়া অনুযায়ী, সাতটি কলেজকে চারটি স্কুলে বিভক্ত করে একটি ‘ইন্টারডিসিপ্লিনারি’ কাঠামোয় বিশ্ববিদ্যালয়টি পরিচালিত হবে, যেখানে উচ্চমাধ্যমিক থেকে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত পাঠদান চালু রাখার কথা বলা হয়েছে।