রুবিও: ভেনেজুয়েলায় ইরান ও হিজবুল্লাহর শক্তিশালী ঘাঁটি রয়েছে

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও দাবি করেছেন, ইরান, তার বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) এবং লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ভেনেজুয়েলায় শক্তিশালী উপস্থিতি গড়ে তুলেছে। তিনি মনে করেন, লাতিন আমেরিকায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তিগুলোর এই অবস্থান দেশটির নিরাপত্তার জন্য গুরুতর উদ্বেগ তৈরি করছে।

সম্প্রতি ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রুবিও জানান, ইরান, আইআরজিসি ও হিজবুল্লাহ দক্ষিণ আমেরিকায় তাদের অবস্থান তৈরি করেছে এবং এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটিটি ভেনেজুয়েলায় অবস্থিত। তার মতে, ‘নিকোলাস মাদুরোর সরকারের খোলামেলা সহযোগিতা ছাড়া এ ধরনের উপস্থিতি সম্ভব নয়।’

রুবিওর এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এলো, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প লাতিন আমেরিকা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে মাদক প্রবাহ কমাতে জোর অভিযান চালাচ্ছেন। এই অভিযানের অংশ হিসেবে ওয়াশিংটন ক্যারিবিয়ান ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে সন্দেহভাজন মাদকবাহী নৌযানে সামরিক তৎপরতা বাড়িয়ে ভেনেজুয়েলার ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে।

রুবিও আরও বলেন, ‘মাদুরো যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতিকে হুমকি বলে মনে করছেন, এটাই প্রমাণ করে তিনি নিজেও মাদকব্যবসার সঙ্গে জড়িত।’ যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে মাদুরোকে ‘অবৈধ নেতা’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে আসছে এবং তার বিরুদ্ধে মাদকচোরাচালানের অভিযোগে ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

গত কয়েক মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে একটি বিমানবাহী রণতরীসহ উল্লেখযোগ্য সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন করেছে। অন্যদিকে, মাদুরো অভিযোগ করছেন যে, এসব পদক্ষেপ তার সরকার উৎখাতের পরিকল্পনারই অংশ।

ইরান বহু বছর ধরে ভেনেজুয়েলার ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখে উভয় দেশই পারস্পরিক স্বার্থে একে অপরকে সমর্থন দিয়ে আসছে। ২০২২ সালে তারা তেহরানে একটি ২০ বছরমেয়াদি সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করে, যেখানে তেল, প্রতিরক্ষা ও বিভিন্ন খাতে অংশীদারিত্বের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। সম্প্রতি ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি ভেনেজুয়েলার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের চাপকে ‘দাদাগিরি’ বলে অভিহিত করেছেন।

এদিকে, দক্ষিণ আমেরিকায় হিজবুল্লাহর তহবিল সংগ্রহ ও নেটওয়ার্ক পরিচালনার একটি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। গত অক্টোবরে মার্কিন সিনেটের আন্তর্জাতিক মাদকনিয়ন্ত্রণ বিষয়ক ককাস এ বিষয়ে একটি বিশেষ শুনানির আয়োজন করেছিল।

সেই শুনানিতে সিনেটর জন কর্নিন দাবি করেন, ‘হিজবুল্লাহ ভেনেজুয়েলায় আশ্রয় পেয়েছে। শ্যাভেজ ও মাদুরো সরকার ইরান ও হিজবুল্লাহর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছে এবং এমনকি হিজবুল্লাহ সদস্যদের ভেনেজুয়েলার পাসপোর্টও দেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে চাপ বাড়ার কারণে হিজবুল্লাহ লাতিন আমেরিকায় তাদের মাদকব্যবসা ও অর্থপাচারের নেটওয়ার্ক আরও বিস্তৃত করার চেষ্টা করছে।