ভোজ্যতেলের দাম: সরকারের হিসেবে বেড়েছে, ব্যবসায়ীদের হিসেবে কমেছে

দেশে ভোজ্যতেলের বাজারকে কেন্দ্র করে আবারও নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন রবিবার (৭ ডিসেম্বর) নতুন দাম ঘোষণা করলেও সরকারি হিসেবে ভোক্তাদের কাছে দাম বৃদ্ধি হিসাবেই দেখা যাচ্ছে।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, সোমবার (৮ ডিসেম্বর) থেকে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হবে ১৯৫ টাকায়, যা গত ২৪ নভেম্বর থেকে ১৯৯ টাকা দরে বিক্রি করছিল কোম্পানিগুলো। একইভাবে ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন বিক্রি হবে ৯৫৫ টাকায়, যা বিক্রি হচ্ছিল ৯৮৫ টাকায়।

এছাড়া খোলা সয়াবিন এখন থেকে প্রতি লিটার ১৭৬ টাকা ও পাম অয়েল প্রতি লিটার ১৬৬ টাকা দরে বিক্রি হবে। গত ২৪ নভেম্বর থেকে খোলা সয়াবিন প্রতি লিটার ১৭৯ টাকা ও পাম অয়েল প্রতি লিটার ১৬৯ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছিল।

তবে সরকারিভাবে হিসাব করলে, গত অক্টোবর-নভেম্বরের বাজারদর থেকে এখন ভোজ্যতেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নজরদারিতে দাম কমানোর আংশিক পদক্ষেপ হলেও সাধারণ ভোক্তারা এখনও উচ্চমূল্যের বোঝা অনুভব করছেন।

বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন জানায়, আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। বোঝাপড়ার ভিত্তিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনার পর এই নতুন দর কার্যকর করা হবে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এটি আগের ‘অত্যধিক দাম’ থেকে কমানো।

অন্যদিকে, সরকার বলছে, পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বাজার পর্যবেক্ষণ চালানো হচ্ছে। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, অনুমতি ছাড়া দাম বাড়ানো হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ভোক্তারা বলছেন, এই ধরনের ঘোষণায় বোঝাপড়া অস্পষ্ট থাকায় তাদের কাছে দাম এখনও বেশি মনে হচ্ছে। খুচরা পর্যায়ে সয়াবিন তেল লিটারপ্রতি ১৯৫ টাকায় বিক্রি হলেও সাধারণ ক্রেতার পক্ষে সামঞ্জস্য না থাকায় ‘দাম বেড়েছে’ ধাক্কা পড়ছে।

একই সঙ্গে, ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারের চড়া মূল্যের প্রভাব মাথায় রেখে তারা আগের তুলনায় কম দরে বাজারে তেল বিক্রি করছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকার ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে ‘দামের ধারা’ নিয়ে এই পার্থক্য ভোক্তাদের বিভ্রান্ত করছে। সরকার চাইছে বাজারে সহনীয়তা থাকুক, ব্যবসায়ীরা চাইছে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মিল রেখে লাভ বজায় থাকুক।

ফলে, ভোজ্যতেলের দামকে কেন্দ্র করে ‘সরকারের হিসেবে বাড়ছে, ব্যবসায়ীদের হিসেবে কমছে’এই দ্বন্দ্ব অব্যাহত।