২০৩৮ সালের মধ্যে জার্মানির ৩০ শতাংশ মানুষই হবেন অবসরপ্রাপ্ত

২০৩৮ সালের মধ্যে জার্মানির অবসরপ্রাপ্ত মানুষের সংখ্যা অন্তত ৩৮ লাখ বেড়ে ২ কোটি ৫ লাখে পৌঁছাবে। দেশটির পরিসংখ্যান অফিস ডেস্টাটিস জানিয়েছে, ওই সময়ের মধ্যে মোট জনসংখ্যার ২৭ শতাংশের বেশি হবে অবসরপ্রাপ্ত নাগরিক। এই পরিবর্তনের ফলে দেশটির সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি হতে পারে।

সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ১০ বছরের মধ্যে জার্মানির প্রতি চারজন মানুষের একজন ৬৭ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সী হবেন। বর্তমানে দেশটিতে অবসরপ্রাপ্ত মানুষের হার মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশ। কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা কমে যাওয়ায় দেশটির অর্থনীতি ও সমাজ ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ডেস্টাটিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০৭০ সাল নাগাদ জার্মানির জনসংখ্যা বর্তমানের চেয়ে কমে ৭ কোটি ৪৭ লাখে নেমে আসবে। জন্মহার, গড় আয়ু এবং অভিবাসনের মাঝারি প্রবৃদ্ধির ওপর ভিত্তি করে এই ধারণা করা হয়েছে। ২৭টি সম্ভাব্য পরিস্থিতির মধ্যে মাত্র দুটিতে উচ্চ অভিবাসন ও জন্মহারের কারণে জনসংখ্যা সামান্য বাড়ার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। ২০৭০ সালে জার্মানির জনসংখ্যা ৬ কোটি ৩৯ লাখ থেকে ৮ কোটি ৬৫ লাখের মধ্যে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। ২০২২ সালে এই প্রাক্কলন ছিল ৭ কোটি ২ লাখ থেকে ৯ কোটি ৪৪ লাখের মধ্যে।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিকে জন্ম নেওয়া প্রজন্মের অবসর গ্রহণ এবং তরুণ প্রজন্মের আগমনের কারণে ২০৩০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা (২০-৬৬ বছর বয়সী) কমতে থাকবে। অভিবাসনের মাধ্যমে এই ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ডেস্টাটিসের জনসংখ্যা বিষয়ক প্রধান কার্স্টেন লুমার বলেন, ‘জার্মানিতে বর্তমানে প্রতি ১০০ জন কর্মক্ষম মানুষের বিপরীতে ৩৩ জন অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তি রয়েছেন। ২০৭০ সালে এই সংখ্যা বেড়ে ৪৩ জনে দাঁড়াতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে, অর্থাৎ জন্মহার ও অভিবাসন ধারাবাহিকভাবে কম থাকলে, বৃদ্ধ মানুষের নির্ভরশীলতার অনুপাত ৬১ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। এটি বর্তমান হারের প্রায় দ্বিগুণ।’

এদিকে অভিবাসনের কারণে গত বছর জার্মানির জনসংখ্যা ০.১ শতাংশ বেড়ে ৮ কোটি ৩৬ লাখ হয়েছে। তবে নিট অভিবাসনের সংখ্যা কমে ৪ লাখ ২০ হাজারে দাঁড়িয়েছে, যা ২০২৩ সালে ছিল ৬ লাখ ৬০ হাজার। এছাড়া গত বছর জন্মের চেয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ৩ লাখ ৩০ হাজার বেশি ছিল। গত বছর ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যা ছিল ২ কোটি ৫৫ লাখ, যা মোট জনসংখ্যার ৩০.৫ শতাংশ।