আপনি পড়ছেন

যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদ লাভের বিষয়ে নিজেদের অবস্থান থেকে সরে এসে দ্বিপক্ষীয় নিরাপত্তা নিশ্চয়তা বা গ্যারান্টিকে একটি ‘সমঝোতা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপসহ অন্য দেশগুলোর সঙ্গে এই নিরাপত্তা চুক্তিগুলো রাশিয়ার আগ্রাসন ঠেকানোর একটি সুযোগ।

ভলোদিমির জেলেনস্কি

রবিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জেলেনস্কি ন্যাটোর সদস্য হওয়ার বিষয়ে তার দেশের দীর্ঘদিনের অবস্থানের কথা স্মরণ করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, ন্যাটোতে যোগ দেওয়াটাই তাদের জন্য ‘প্রকৃত নিরাপত্তা নিশ্চয়তা’ ছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের কিছু অংশীদার এই পথকে সমর্থন করেনি।

ইউক্রেন এখন ওয়াশিংটনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় নিরাপত্তা নিশ্চয়তার দিকে এগোচ্ছে, যা ন্যাটোর ‘অনুচ্ছেদ ৫’-এর মতোই নিরাপত্তা প্রদান করবে। একই সঙ্গে কানাডা, জাপান এবং ইউরোপীয় দেশগুলোর কাছ থেকেও অনুরূপ নিশ্চয়তা পাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। আরবিসি-ইউক্রেন সংবাদমাধ্যমের বরাতে জেলেনস্কি বলেন, ‘রাশিয়ার আগ্রাসনের আরেকটি ঢেউ রোধ করার জন্য এই নিরাপত্তা নিশ্চয়তা আমাদের জন্য একটি সুযোগ। আর আমাদের পক্ষ থেকে এটি ইতোমধ্যে একটি সমঝোতা।’

জেলেনস্কির এই মন্তব্য ন্যাটোর সদস্যপদ লাভের বিষয়ে কিয়েভের অবস্থানে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। ২০১৯ সালে সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে ন্যাটোর সদস্য হওয়ার আকাঙ্ক্ষাকে ইউক্রেনের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। অন্যদিকে, রাশিয়া বরাবরই ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার বিরোধিতা করে আসছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধ শুরুর কয়েক দিন আগে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এ ধরনের পদক্ষেপকে মস্কোর নিরাপত্তার জন্য ‘সরাসরি হুমকি’ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে চলমান আলোচনার মধ্যেই জেলেনস্কি এই মন্তব্য করলেন। এই আলোচনা জার্মানির রাজধানী বার্লিনে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎসের কার্যালয় জানিয়েছে, শান্তি আলোচনার সর্বশেষ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে তিনি সোমবার জেলেনস্কি এবং ইউরোপের কয়েকজন নেতাকে স্বাগত জানাবেন।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে জার্মান সরকারের মুখপাত্র স্টেফান কর্নিলিয়াস জানান, চ্যান্সেলর মের্ৎস প্রথমে জেলেনস্কির সঙ্গে জার্মান-ইউক্রেনীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং চলমান শান্তি আলোচনার অবস্থা নিয়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। তিনি আরও বলেন, ‘সোমবার সন্ধ্যায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান, সেই সঙ্গে ইইউ এবং ন্যাটোর শীর্ষ প্রতিনিধিরা আলোচনায় যোগ দেবেন।’ তবে বৈঠকে অংশগ্রহণকারীদের নাম বা আলোচনার এজেন্ডা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনা সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে জেলেনস্কি বলেন, এই নথি সবাইকে খুশি করতে পারবে না এবং এতে ‘কোনো না কোনো ফরম্যাটে’ অনেক সমঝোতা রয়েছে। তিনি মনে করিয়ে দেন যে, ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে একটি হালনাগাদ পরিকল্পনা পাঠিয়েছে, যার বিষয়ে ওয়াশিংটন থেকে এখনো কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। তবে কিয়েভের প্রতিনিধিদলের মাধ্যমে তিনি বেশ কিছু বার্তা পেয়েছেন।

জেলেনস্কি আরও বলেন, ‘আমি সব সংকেত গ্রহণ করছি এবং সংলাপের জন্য প্রস্তুত থাকব, যা আজ শুরু হবে। আজ বার্লিনে আমাদের ইউক্রেন-যুক্তরাষ্ট্র দিবস। অবশ্যই, আমি চ্যান্সেলর মের্ৎসের সঙ্গে আলাদাভাবে দেখা করব এবং সম্ভবত সন্ধ্যায় আমাদের কয়েকজন ইউরোপীয় নেতার সঙ্গেও সাক্ষাৎ করব।’

ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট সতর্ক করে বলেন, বর্তমান কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে যুদ্ধ শেষ করার জন্য কিয়েভকে ‘অন্য পথ’ খুঁজতে হবে। তিনি উল্লেখ করেন যে, রাশিয়ার সঙ্গে তাদের কোনো সরাসরি যোগাযোগ নেই। এছাড়া ডনবাস অঞ্চল থেকে ইউক্রেনীয় সেনা প্রত্যাহারের রুশ দাবিকে ‘ন্যায্য নয়’ বলে বর্ণনা করেন তিনি। তার মতে, বর্তমান ফ্রন্ট লাইন বা সম্মুখ সমররেখা বরাবর কিয়েভ ও মস্কোর মধ্যে যুদ্ধবিরতি একটি ন্যায্য ও বাস্তবসম্মত বিকল্প হতে পারে।

এদিকে শুক্রবার রাশিয়ার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম কমার্স্যান্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রুশ প্রেসিডেন্টের সহযোগী ইউরি উশাকভ জানিয়েছেন, ইউক্রেন ডনবাস অঞ্চল থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহার করলেই কেবল যুদ্ধবিরতি সম্ভব হতে পারে।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.