জেরুজালেমকে বিচ্ছিন্ন করার ইসরায়েলি উদ্যোগ, ফিলিস্তিনের সতর্কতা

মধ্য পশ্চিম তীরে প্রায় নয় হাজার নতুন ইসরায়েলি বসতিঘর নির্মাণের পরিকল্পনাকে ‘বিপজ্জনক’ বলে আখ্যা দিয়েছে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ। সোমবার জেরুজালেম গভর্নরেটের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এই সতর্কতা জারি করে জানানো হয়, ইসরায়েল জেরুজালেম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও এর আশপাশের এলাকায় এই বসতি প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি দখলদার কর্তৃপক্ষ জেরুজালেম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জমি ও সংলগ্ন এলাকায় একটি বিপজ্জনক বসতি পরিকল্পনা কার্যকর করতে চাইছে। ফিলিস্তিনি গভর্নরেটের মতে, এই পরিকল্পনা জেরুজালেম ও রামাল্লাহ শহরের মধ্যে ভৌগোলিক এবং জনমিতিক সংযোগের জন্য একটি সরাসরি হুমকি।

প্রস্তাবিত এই পরিকল্পনার আওতায় কাফর আকাব, কালান্দিয়া, আল-রাম, বেইত হানিনা ও বির নাবালার মতো ঘনবসতিপূর্ণ ফিলিস্তিনি এলাকায় প্রায় নয় হাজার বসতি ইউনিট স্থাপন করা হবে। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জানায়, এর ফলে জেরুজালেম ও তার আশপাশের এলাকার ওপর আরোপিত বিচ্ছিন্নতা ও অবরোধ নীতি আরও গভীর হবে এবং দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের সম্ভাবনাও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ইসরায়েলের একটি কমিটি আগামী বুধবার এই পরিকল্পনা নিয়ে বৈঠকে বসবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। বৈঠকে প্রকল্পটির জন্য নির্দিষ্ট কিছু এলাকা বরাদ্দের বিষয়েও আলোচনা হতে পারে।

জেরুজালেম গভর্নরেট আরও অভিযোগ করেছে, সম্প্রতি ইসরায়েলের অর্থ মন্ত্রণালয় দূষিত ভূমি পুনর্বাসনের অজুহাতে পরিবেশ সুরক্ষা মন্ত্রণালয়ে ১ কোটি ৬০ লাখ শেকেল (প্রায় ৫০ লাখ ডলার) হস্তান্তরের অনুরোধ করেছে। তাদের মতে, এটি বাস্তবে বসতি প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি বাড়ানোর একটি কৌশল। গভর্নরেট সতর্ক করে বলেছে, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে উত্তর জেরুজালেম তার ফিলিস্তিনি পরিমণ্ডল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে একটি বসতি অঞ্চলে পরিণত হবে।

এর আগে ফিলিস্তিনের সরকারি সংস্থা ‘কলোনাইজেশন অ্যান্ড ওয়াল রেজিস্ট্যান্স কমিশন’ জানিয়েছিল, গত নভেম্বর মাসে ইসরায়েল পশ্চিম তীরে প্রায় দুই হাজার ৮০০ দুনাম জমি দখল করেছে। সংস্থাটির দাবি, দখল, অধিগ্রহণ আদেশ এবং তথাকথিত ‘রাষ্ট্রীয় জমি’র সীমানা পরিবর্তনের মাধ্যমে এই জমি নেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, জাতিসংঘ বারবার জানিয়ে আসছে যে অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বসতি নির্মাণ আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে অবৈধ। গত জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতও (আইসিজে) এক ঐতিহাসিক মতামতে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের দখলকে অবৈধ ঘোষণা করে এবং পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম থেকে সব বসতি প্রত্যাহারের আহ্বান জানায়।