জাতিসংঘ: জন্মভূমির বাইরে বাস করছেন ৩০ কোটির বেশি মানুষ

বর্তমানে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪ শতাংশ বা আনুমানিক ৩০ কোটি ৪০ লাখ মানুষ তাদের জন্মভূমির বাইরে বসবাস করছেন। আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

আইওএম-এর মহাপরিচালক অ্যামি পোপ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘অভিবাসন সব জায়গায় পরিবার এবং সম্প্রদায়ের জীবনের সঙ্গে মিশে আছে। এটি সাহস, সংকল্প এবং সীমান্তের ওপারে আমাদের যে বন্ধন রয়েছে তার গল্প।’

তিনি আরও বলেন, ‘নিরাপত্তা ও সুযোগের সন্ধানে যারা যাত্রা করেছেন আজ আমরা তাদের সম্মান জানাই। তাদের সুরক্ষার জন্য ন্যায্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবস্থা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী সংহতির আহ্বান জানাচ্ছি। যখন মর্যাদা ও উদ্দেশ্যের সঙ্গে অভিবাসন পরিচালনা করা হয়, তখন এটি সবার জন্য উপকারী হয়।’

আইওএম-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে অভিবাসীরা আনুমানিক ৯০৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। যার বেশিরভাগই নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে গেছে এবং পরিবারগুলোর খাদ্য, শিক্ষা ও চিকিৎসার খরচ মেটাতে সহায়তা করেছে।

সংস্থাটি জানায়, অভিবাসীরা দক্ষতা, সৃজনশীলতা এবং উদ্যোক্তা হওয়ার মাধ্যমে স্থানীয় অর্থনীতিকে শক্তিশালী করেন। বিশেষ করে প্রবীণ জনসংখ্যা বাড়ছে এমন দেশগুলোতে স্বাস্থ্যসেবা, নির্মাণ, কৃষি ও প্রযুক্তিসহ প্রধান খাতগুলোতে শ্রম অভিবাসীরা গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা দিচ্ছেন।

একইসঙ্গে আইওএম ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জগুলোর বিষয়ে সতর্ক করেছে। সংঘাত, সহিংসতা ও বিপর্যয়ের কারণে ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ ৮ কোটি ৩৪ লাখ মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এছাড়া নিয়মিত পথের সীমাবদ্ধতার কারণে অনেক অভিবাসী বিপজ্জনক যাত্রার মুখোমুখি হচ্ছেন।

আইওএম জানায়, ভূমধ্যসাগর বিশ্বের অন্যতম ‘মারাত্মক’ অভিবাসন রুট হিসেবে রয়ে গেছে। ২০১৪ সাল থেকে সেখানে ৩৩ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু রেকর্ড করা হয়েছে। অভিবাসী ও আশ্রয়দাতা—উভয় সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা, মর্যাদা এবং সুবিধা নিশ্চিত করতে শক্তিশালী অভিবাসন ব্যবস্থার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

যুক্তরাষ্ট্রের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) দিবসটি উপলক্ষে জানায়, ‘কোনো যাত্রাই যেন ট্র্যাজেডিতে শেষ না হয়।’

জাতিসংঘের এই স্বাস্থ্য সংস্থাটি আরও জানায়, ‘০১৪ সাল থেকে অভিবাসন যাত্রায় প্রায় ৮০ হাজার মানুষ মারা গেছেন। তাদের অধিকাংশকেই শনাক্ত করা যায়নি, যা পরিবারগুলোকে অনন্ত অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। নিরাপদ, নিয়মিত ও মর্যাদাপূর্ণ অভিবাসন নিশ্চিত করার পাশাপাশি তাদের স্বাস্থ্যের অধিকার রক্ষা এবং আরও মৃত্যু রোধ করার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।