এ কে খন্দকারের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টা ও রাজনৈতিক নেতাদের গভীর শোক

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং স্বাধীন বাংলাদেশের বিমানবাহিনীর প্রথম প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) এ কে খন্দকারের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে ৯৫ বছর বয়সে এই বীর মুক্তিযোদ্ধা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

তার বিদায়ে এক শোকবার্তায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস মরহুমকে একজন দৃঢ়চেতা, সৎ ও আদর্শনিষ্ঠ দেশপ্রেমিক হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন যে, রণাঙ্গনের সম্মুখযোদ্ধা হয়েও স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস নিয়ে গ্রন্থ রচনা করায় বিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলে এ কে খন্দকারকে রোষানলে পড়তে হয়েছিল। তৎকালীন শাসনের দৃষ্টিতে সত্য ইতিহাস তুলে ধরাই ছিল তার ‘অপরাধ’। প্রধান উপদেষ্টা একাত্তরের রণাঙ্গনে তার সাহসিকতা ও নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন রবিবার (২১ ডিসেম্বর) এক শোকবার্তায় মরহুমের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের ঐতিহাসিক দলিলে মুক্তিবাহিনীর প্রতিনিধি হিসেবে এ কে খন্দকারের উপস্থিতি জাতির ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হয়ে থাকবে। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে তার সফল দায়িত্ব পালনের কথাও উল্লেখ করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক শোকবার্তায় বলেন, এ কে খন্দকার মুক্তিযুদ্ধের অসামান্য অবদানের জন্য জাতির কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তার নিবেদিতপ্রাণ ভূমিকা অনুকরণীয়। তিনি উল্লেখ করেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ কে খন্দকার ‘বীর উত্তম’ খেতাব এবং ২০১১ সালে স্বাধীনতা পদক লাভ করেন।

অন্যদিকে, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) তাদের বিবৃতিতে জানায়, যুদ্ধকালীন সামরিক পরিকল্পনা ও সমন্বয়ে তার অবদান ছিল অনস্বীকার্য। দলটি তাকে একজন নীতিবান ও দায়িত্বশীল দেশপ্রেমিক হিসেবে আখ্যায়িত করে।

মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিবাহিনীর ডেপুটি চিফ অব স্টাফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করা এ কে খন্দকার স্বাধীন দেশের বিমানবাহিনী পুনর্গঠনেও দূরদর্শী নেতৃত্বের স্বাক্ষর রাখেন। বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে তিনি রাজনীতিতেও সক্রিয় ছিলেন। পাবনা-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া এবং দুই দফায় মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা এই বীর সেনানী স্ত্রী, দুই ছেলে, এক কন্যা ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।