রবিবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বৈঠক, শান্তি আলোচনায় অগ্রগতির আশা
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
রাশিয়ার সঙ্গে প্রায় চার বছর ধরে চলা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে শান্তি চুক্তির লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) ফ্লোরিডায় এই বৈঠক হবে।

জেলেনস্কি শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) সাংবাদিকদের জানান, এই বৈঠক থেকে চূড়ান্ত কোনো চুক্তি হবে কি না—তা এখনই বলা সম্ভব নয়। তবে দুই পক্ষ যতটা সম্ভব বিষয় চূড়ান্ত করার চেষ্টা করবে। এর আগে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লেখেন, নতুন বছরের আগেই অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জানান, ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে প্রণীত ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার প্রায় ৯০ শতাংশ প্রস্তুত। বৈঠকে তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিশ্চিতে মিত্র দেশগুলোর ভূমিকা নিয়েও আলোচনা করবেন।
এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, তিনি আশা করছেন, বৈঠকটি ইতিবাচক হবে। তবে তিনি ইঙ্গিত দেন, তার অনুমোদন ছাড়া কোনো চুক্তি কার্যকর হবে না। একই সঙ্গে ট্রাম্প জানান, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও শিগগিরই কথা বলার ইচ্ছা রয়েছে।
মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত এক সপ্তাহ ধরে ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আলোচনার পর এই বৈঠক ফলপ্রসূ হবে বলে তারা আশাবাদী। ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যুদ্ধ অবসানের একটি কাঠামো চূড়ান্ত করাই জেলেনস্কির মূল লক্ষ্য।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই বৈঠকে কোনো ইউরোপীয় নেতা অংশ নেবেন না বলে মার্কিন ও ইউরোপীয় সূত্র জানিয়েছে। ইউক্রেন দীর্ঘদিন ধরেই ট্রাম্পের সঙ্গে সরাসরি বৈঠকের চেষ্টা করে আসছিল। যদিও ইউরোপীয় কর্মকর্তারা বৈঠকটি ইতিবাচক হবে বলে মনে করছেন, তবুও তারা স্বীকার করেছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনার ফলাফল অনিশ্চিত।
রবিবারের বৈঠকের প্রস্তুতি হিসেবে জেলেনস্কি ন্যাটো, কানাডা, জার্মানি, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক ও এস্তোনিয়ার নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ইউক্রেন কখনোই শান্তির পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি এবং প্রয়োজনীয় সব নথি দ্রুত প্রস্তুত করতে কাজ চালিয়ে যাবে। এই ঘোষণার আগে শান্তি আলোচনায় অগ্রগতি আনতে কিছু স্পর্শকাতর বিষয়ে ছাড় দেওয়ার ইঙ্গিত দেন জেলেনস্কি। তবে এসব ছাড় রাশিয়ার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে কি না—তা এখনও স্পষ্ট নয়।
এর আগে ২৮ দফার একটি শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা শুরু হলেও সেটি রাশিয়ার পক্ষে বেশি অনুকূল বলে সমালোচিত হয়। পরে ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনার মাধ্যমে তা কমিয়ে ২০ দফায় আনা হয়, যাকে জেলেনস্কি যুদ্ধ অবসানের ভিত্তিমূলক নথি হিসেবে বর্ণনা করেছেন। জেলেনস্কি জানান, সর্বশেষ প্রস্তাবের বিষয়ে এখনো ক্রেমলিনের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। কিয়েভ কেবল ওয়াশিংটনের সঙ্গেই আলোচনা করছে, আর যুক্তরাষ্ট্র মস্কোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।
তিনি বলেন, ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সমঝোতা প্রায় প্রস্তুত হলেও যেকোনো শান্তি চুক্তিতে রাশিয়া ও ইউরোপীয় মিত্রদের সম্মতি প্রয়োজন। রাশিয়া রাজি না হলে মস্কোর ওপর চাপ বাড়ানোর প্রয়োজন হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন জেলেনস্কি। তার ভাষ্য, ইউক্রেন গঠনমূলক অবস্থান নিলেও যদি রাশিয়া রাজি না হয়, তবে বর্তমান চাপ যথেষ্ট নয়।
রাশিয়ার প্রধান দাবি— ইউক্রেন যেন ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা বাদ দেয় এবং পূর্ব ইউক্রেনের দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহার করে। জেলেনস্কি এই দুই বিষয়েই সীমিত ছাড়ের প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি বলেন, ইউক্রেন ন্যাটোর পূর্ণ সদস্যপদ আর চাইবে না, তবে ন্যাটোর আর্টিকেল ৫-এর মতো নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চায়। এছাড়া দোনেৎস্ক অঞ্চলের কিছু এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহারে প্রস্তুতির কথা জানান।
ইউক্রেনের সংবিধান অনুযায়ী সীমান্ত পরিবর্তনের জন্য গণভোট প্রয়োজন। জেলেনস্কি পুনর্ব্যক্ত করেন, ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ ইউক্রেনের জনগণই নির্ধারণ করবে। রাশিয়াকে আলোচনায় বসাতে মিত্র দেশগুলোর যথেষ্ট সক্ষমতা আছে।
এদিকে ক্রেমলিন এখনো তাদের অবস্থানে অনড়। রাশিয়ার মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানান, পুতিনের পররাষ্ট্রনীতি উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সর্বশেষ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেছেন। তবে কবে এই আলোচনা হয়েছে তা তিনি জানাননি।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.