খালেদা জিয়ার জানাজা হতে পারে বুধবার, জিয়াউর রহমানের পাশে দাফনের পরিকল্পনা

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জানাজা আগামীকাল বুধবার হতে পারে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। এদিন রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জানাজার আয়োজন করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

সালাহউদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে জানান, বুধবার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জানাজা শেষে সংসদ ভবন এলাকার পাশে অবস্থিত জিয়া উদ্যানে খালেদা জিয়ার স্বামী ও বাংলাদেশের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হতে পারে।

বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোরে মারা যান। দলের পক্ষ থেকে এ খবর নিশ্চিত করার পর থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা রাজধানীর এভারকেয়ারের হাসপাতালের সামনে আসতে শুরু করেছেন। তাদের অনেকে হাসপাতাল প্রাঙ্গণে প্রবেশের চেষ্টা করছেন। তবে ব্যারিকেড দিয়ে তাদের আটকে রেখেছে পুলিশ।

গত ২৩ নভেম্বর থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন খালেদা জিয়া। হাসপাতালে আছেন তার বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ ছাড়া পরিবারের অন্য সদস্যরা হাসপাতালে রয়েছেন। হাসপাতালে আছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, দলের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম। সকাল আটটার পর হাসপাতালে আসেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাস। এর কিছু সময় পর আসেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

বিএনপি বলছে, খালেদা জিয়ার মৃত্যুর সময় সেখানে তার ছেলে এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, ছেলের বউ জোবায়দা রহমান, নাতনী জাইমা রহমান এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

খালেদা জিয়ার অবস্থা ‘সংকটময়’ জানানোর পর থেকেই দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎকণ্ঠা তৈরি হয়। তাদের অনেকেই গত বেশ কিছুদিন ধরে হাসপাতালের সামনে ভিড় করছেন। এরপর থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য পরিস্থিতি নিয়ে দলের সর্বস্তরে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। সামাজিক মাধ্যমেও তার সবশেষ অবস্থা নিয়ে নানা গুঞ্জন দেখা যায়। দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিএনপি এবং অন্য রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়ার সুস্থতা প্রার্থনায় দোয়া মাহফিল আয়োজন করা হয়।

শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় ২৩ নভেম্বর জরুরি ভিত্তিতে খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেয়া হয়। এর আগে ২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে রওনা দিয়ে গাড়িতে ওঠেই অস্বস্তি বোধ করছিলেন তিনি। বহু বছর ধরেই খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস এবং চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। ঢাকায় নিজের বাসায় থাকা অবস্থাতেই ২০২১ সালের মে মাসে করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নেন তিনি। তখনো শ্বাসকষ্টে ভোগার কারণে তাকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে থেকে চিকিৎসা নিতে হয়েছিল। এরপর ২০২৪ সালের জুনে তার হৃদপিণ্ডে পেসমেকার বসানো হয়। তখনো তিনি মূলত হার্ট, কিডনি ও লিভারসহ বিভিন্ন ধরনের রোগে ভুগছিলেন, যা তার শারীরিক অবস্থাকে জটিল করে তুলেছিল। এর আগে থেকেই তার হার্টে তিনটি ব্লক ছিল। আগে একটা রিংও পরানো হয়েছিল। এ ছাড়া ২০২৪ সালের জুনে পোর্টো সিস্টেমেটিক অ্যানেসটোমেসির মাধ্যমে খালেদা জিয়ার লিভারের চিকিৎসাও দেয়া হয়েছে বিদেশ থেকে চিকিৎসক এনে।