এবার সংসদে অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি

২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংক আমানতের ওপর আবগারি শুল্ক আরোপ এবং ভ্যাট ইস্যুতে সব জায়গায় সমালোচিত হচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। চলমান সংসদ অধিবেশনেও সাংসদদের তোপের মুখে পরতে হয়েছে তাকে। এবার জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি উঠেছে।

বর্তমান সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করে তাকে পদত্যাগের আহ্বান জানান। বাবুল বলেন, 'জনবিরোধী সিদ্ধান্তের জন্য অর্থমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হওয়া উচিত।' ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটের আলোচনায় আজ মঙ্গলবার জিয়াউদ্দিন এভাবেই তার অভিমত ব্যক্ত করেন।

জাতীয় পার্টির সাংসদ বলেন, 'মুহিত সাহেবের অনেক বয়স হয়েছে। তিনি সকলের অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন। এখনই তার পদত্যাগের সময় হয়েছে। তার পদত্যাগ করা উচিত। আপনি অবসর নিয়ে পুরো জাতিকে মুক্তি দিন।'

ব্যাংকগুলোর মূলধনে ২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করার প্রস্তাবে ব্যাপক সমালোচনা করেন এ সময় জিয়াউদ্দিন বাবলু। তিনি বলেন, 'এসব বিষয় নীতি নৈতিকতার মধ্যে পড়ে না। এ ধরনের নৈতিকতা ও আইনবিরোধী প্রস্তাব কীভাবে তিনি করেন। এ ব্যাপক পরিমাণ টাকা তিনি শিক্ষা-স্বাস্থ্য বা অন্য কোনো খাতে ব্যবহার করতে পারতেন। আগের তিন অর্থবছরেও ব্যাংকিং সেক্টরে টাকা দিয়েছেন।'

জিয়াউদ্দিন আরো বলেন, 'ট্যাক্স পেয়ার মানি ভুর্তুকি দিয়ে লুট হওয়া টাকার ঘাটতি পূরণ করতে পারেন না অর্থমন্ত্রী। এই অনৈতিক কাজের জন্য অর্থমন্ত্রীকে আইনের আওতায় আনা উচিত। তাকে আইনের কাঠগড়ায় অবশ্যই দাড়াতে হবে। অর্থমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল চার্জ গঠন করা উচিত।'

'ব্যাংকগুলো ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। তাদের কোনমতে অক্সিজেন দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। ব্যাংগুলোর খেলাপি ঋণ এক লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা। আর্থিক এই প্রতিষ্ঠানগুলো দেউলিয়া হয়েছে। আবার ঋণ অবলোপনও করা হয়েছে' বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, 'ব্যাংক থেকে মানুষের টাকা-পয়সা লুট হচ্ছে, দেশবিদেশে অর্থ পাচার হচ্ছে। এসব বিষয় দেখছেন না মন্ত্রী। যারা লুটপাট করছে তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে না।'

অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বাবলু বলেন, 'অর্থমন্ত্রী কি উন্নয়নের মহাসড়কে আছেন নাকি দুর্যোগের মহাসড়কে আছেন? বিষয়টি ভাবতে হবে। আবগারি শুল্কের বিষয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। তিনি বলেছেন নাম নাকি পরিবর্তন করবেন। কানা ছেলের নাম পরিবর্তন করলেও কানাই থাকে। বিগত একবছরে মোটা চালের দাম বেড়েছে ৪৭ শতাংশ। মানুষের জীবন আজ কষ্টের, চাল কিনতে পারছে না। শুধু প্রবৃদ্ধি বাড়লেই হবে? এটা উন্নয়নের একমাত্র মাপকাঠি নয়। অর্থমন্ত্রী মিথ্যা বলে বিভ্রান্ত করছেন। দেশে সুশাসন না থাকলে মানুষ উন্নয়নের কোন সুফল পাবে না।'