ফরহাদ মজহারের 'দখল' নিয়ে র‍্যাব-পুলিশ মুখোমুখি!

সোমবার ভোরে অপহৃত হওয়ার পর ওই দিন রাতেই পুলিশের হাতে উদ্ধার হন কবি, বুদ্ধিজীবী ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার ফরহাদ মজহার। উদ্ধারের পর পুলিশের কাছ থেকে তাঁকে 'দখলে' নিয়ে নেয় র‍্যাব-৬ এর একটি দল। এই নিয়ে পুলিশ ও র‍্যাবের মাঝে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিলো।

র‍্যাবের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে দেশের অন্যতম সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো জানায়, হানিফ পরিবহনের বাস থেকে ফরহাদ মজহারকে উদ্ধার করার পর র‍্যাবের একটি দল এসে পুলিশের কাছ থেকে ফরহাদ মজহারকে নেয়ার চেষ্টা করে। তখন পুলিশ ও র‍্যাবের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। র‍্যাবই শেষ পর্যন্ত ফরহাদকে নিয়ে যায়।

এরপর র‍্যাব তাঁকে নিয়ে ঢাকার পরিবর্তে আবার খুলনার দিকে ১০ কিলোমিটার যাওয়ার পর পুলিশের কয়েকটি গাড়ি এসে র‍্যাবের গাড়ির সামনে ব্যারিকেড তৈরি করে এবং পরিস্থিতি বাজে আকার ধারণ করার দিকে যেতে থাকে। তখন ঢাকার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

পুলিশের জিম্মায় আনার পর মঙ্গলবার সকালে ফরহাদ মজহারকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। তাঁকে প্রথমে নেয়া হয় আদাবর থানায়। সেখান থেকে ডিবির প্রধান কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য নেয়া হয় তাঁকে।

এর আগে আদালতে দেয়া নিজের জবানবন্দিতে ফরহাদ মজহার বলেন, চোখের ওষুধ কেনার জন্য সেদিন ভোরে বাসা থেকে বের হন তিনি। বাসার প্রধান গেট পার হয়ে তিনি ঢাকা সেন্ট্রাল হাসপাতালের দিকে যাচ্ছিলেন। এর মধ্যেই একটি সাদা মাইক্রোবাস তার সামনে এসে থামে এবং দুই তিনজন লোক এসে তাকে জোর করে মাইক্রোতে তুলে নেয়।

ফরহাদ জানান, এরপর তাকে চড়-থাপ্পর মারেন অপহরণকারীরা। এ সময় বেঁধে ফেলা হয় তার চোখও। ফরহাদ তখন অর্থের বিনিময়ে তাকে ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ করেন। প্রাথমিকভাবে অপহরণকারীরা কোটি টাকা দাবি করে তার কাছে। পরে একদিনের মধ্যে ৩৫ লাখ টাকা দিলে ছেড়ে দেয়া হবে বলে জানায় অপহরণকারীরা।

এক পর্যায়ে অপহরণকারীরা ফরহাদ মজহারের নিজের ফোন দিয়ে তার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলিয়ে দেয়। ফরহাদ তখন স্ত্রীকে জানান, তাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে কেউ, যারা তাকে মেরে ফেলতে পারে এবং ৩৫ লাখ টাকা যোগারের জন্য স্ত্রীকে বলেন তিনি।

ফরহাদ মজহার আরো জানান, তাকে মাইক্রোতে তোলার সময় অপহরণকারীরা বলছিলো যে, তুই বেশি বাড়াবাড়ি করছিস। এ সময় তাকে চড় থাপ্পর মেরে নির্যাতন করা হয়।