ট্রাম্পকে মাটিতে পুঁতে ফেলার হুঙ্কার দিল ইরান!

আমেরিকার সঙ্গে ক্রমেই দূরত্ব বাড়ছে ইরানের। এরমধ্যে ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে আসার হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের এই ঘোষণায় বেজায় চটেছে ইরান। ট্রাম্পকে আক্রমণ করে বসেছেন ইরানের সামরিক বাহিনী কুদস ফোর্সের ডেপুটি কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এসমাইল ঘানি। তিনি বলেছেন, 'এমন অনেক ট্রাম্পকে মাটিতে পুতেছে ইরান।'

ইসমাইল ঘানি বলেন, 'ইরান কখনোই যুদ্ধবাজ দেশ নয়। ইরানের বিরুদ্ধে কোন ধ্বংসাত্মক পদক্ষেপ নিলে আমেরিকাকে আফসোস করতে হবে। ট্রাম্প হুমকি দিয়ে নিজেদেরই ক্ষতি করছে। এমন ট্রাম্পকে মাটিতে পুঁতার অভ্যাস ইরানের আছে। ইরান জানে কীভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামতে হবে।' খবর ইরানভিত্তিক বার্তা সংস্থা তাসনিম নিউজ এজেন্সি।

গত শুক্রবার এক ভাষণে ইরান সরকারকে 'অতি গোঁড়া' বলে আখ্যায়িত করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই সঙ্গে ইরানের সঙ্গে থাকা পরমাণু চুক্তি থেকে সরে আসার হুমকি দেন ট্রাম্প। ইরানের ওপর নানামাত্রিক অভিযোগ এনে দেশটির ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞার পরিকল্পনার কথাও জানান ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, 'ইরান সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষক। তাদের সঙ্গে চুক্তিতে থাকার কোন মানে হয় না।'

ইরান পারমাণবিক চুক্তি ক্রমাগত লঙ্ঘন করছে উল্লেখ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, 'ইরানসহ বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর সঙ্গে ২০১৫ সালে যে চুক্তি হয়েছিল, সেই ঐতিহাসিক চুক্তির অনেক শর্ত ইতিমধ্যেই লঙ্ঘন করেছে ইরান। এরকম চলতে থাকলে চুক্তি থেকে বাদ দেয়া হবে ইরানকে।'

ইরানের সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, এমন চুক্তির মধ্য দিয়ে ইরান তাদের পারমাণবিক স্থাপনায় পরমাণু সমৃদ্ধকরণ অনেকটা কমিয়ে দেয়। এরপরই ইরানের ওপর থেকে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। ইরানের এমন দাবির সঙ্গে একমত আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক। চুক্তির শর্তগুলো ইরান পুরোপুরি মেনে চলছে বলে জানায় আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরাও।

জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দুবার ইরানের পরমাণু সমৃদ্ধকরণ কমিয়ে আনার বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করেছেন। সেই সঙ্গে দুইবার চুক্তিটি না বাড়ানোর ইচ্ছা দেখিয়েছেন। আজ রোববার তৃতীয়বারের মতো চুক্তিতে সমর্থন না করার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।

এদিকে ইরানের বিপক্ষে নতুন করে কোন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে কি না সেটি নির্ধারণ করবে মার্কিন কংগ্রেস। মার্কিন আইনসভাকে আগামী ৬০ দিনের মধ্যে নির্ধারণ করবে যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু চুক্তি থেকে সরে আসবে কি না। অর্থাৎ ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র আবার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে নাকি চুক্তিতে থেকে যাবে সেটি পুরোটাই মার্কিন কংগ্রেসের ওপর নির্ভর করছে।

ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই ইরানের সঙ্গে চুক্তিতে থাকা অন্য রাষ্ট্রগুলো আশঙ্কা করেছিল, ট্রাম্প হয়তো সম্পূর্ণভাবে এই পরমাণু চুক্তি থেকে সরে আসবেন। সেই আশঙ্কা সত্যি হচ্ছে। ট্রাম্প বলে দিয়েছেন, মার্কিন কংগ্রেস চুক্তির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না নিলে তিনি নিজেই এই চুক্তি থেকে সরে আসবেন। চুক্তিতে থাকা রাষ্ট্রগুলো হলো: যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, চীন ও ইরান।