স্ত্রীর চার মাস পর চলে গেলেন আবদুর রহমান বিশ্বাস

স্ত্রীর মৃত্যুর চার মাসের ব্যবধানে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুর রহমান বিশ্বাস। শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। তার ছেলে মাহমুদুল হাসান বিশ্বাস সাংবাদিকদের জানান, শুক্রবার সন্ধ্যার পর অসুস্থ হন সাবেক এ রাষ্ট্রপতি। পড়লে তাকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ইউনাইটেড হাসপাতালের এক কর্মকর্তা বলেন, রাত সাড়ে ৮টার দিকে উনাকে আনা হয়েছিল। তার আগেই তার মৃত্যু হয়।

গত ১৭ জুন বিচারপতি আবদুর রহমান বিশ্বাসের স্ত্রী হোসনে আরা রহমান মারা যান। এরপর থেকে অনেকটা নিঃসঙ্গভাবেই জীবন কাটিয়েছিলেন সাবেক এ রাষ্ট্রপতি। মৃত্যুকালে স্ত্রী হোসনে আরার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।

শৈশব ও কৈশোর: আবদুর রহমান বিশ্বাস ১৯২৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর বরিশালের শায়েস্তাবাদ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বরিশালে কাটে আবদুর রহমান বিশ্বাস স্কুল ও কলেজ জীবন।

উচ্চতর ডিগ্রি: তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ (সম্মান) ও ইতিহাস এবং আইনে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।

কর্মজীবন: প্রথমে তিনি স্থানীয় সমবায় ব্যাংকের সভাপতি হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। শিক্ষা বিস্তারের উদ্দেশ্যে তিনি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। এই কাজের জন্য সরকার ১৯৫৮ সালে তাকে সেচ্ছাসেবী সমাজকর্মী হিসেবে স্বীকৃতি দান করে। ষাটের দশকে কিছুদিন বাবুগঞ্জ পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। পরে বরিশালে আইন পেশায় জড়িয়ে পড়েন।

তিনি ১৯৬২ ও ১৯৬৫ সালে পূর্ব পাকিস্তান আইন সভার সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৬৫ থেকে ১৯৬৯ পর্যন্ত তিনি সংসদ সচিব হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৭ সালে তিনি জাতিসংঘের ২২তম সাধারণ সভায় অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭৪ ও ১৯৭৬ সালে তিনি বরিশাল বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্বাচিত হন।

রাজনৈতিক জীবন: ১৯৭৭ সালে তিনি বরিশাল পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে আবদুর রহমান বিশ্বাস জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৯-৮০ সময়ে তিনি রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভায় পাটমন্ত্রী ছিলেন। আর ১৯৮১-৮২ সালে রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস্ সাত্তারের মন্ত্রিসভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন।