পৈত্রিক জমি বিক্রি ও ঋণ করে প্রধানমন্ত্রীর জন্য খাট!

ছোটবেলা থেকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ভালোবাসেন কাঠমিস্ত্রি আবুল কাশেম। বুঝ হওয়ার পর থেকে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো রাজনৈতিক দল সমর্থন করার কথা চিন্তাও করেননি। পেশায় আসবাব তৈরির মিস্ত্রি আবুল কাশেম কাঠ খোদাই করে নকশার জন্য এলাকায় বেশ সুপরিচিত।

একদিন হঠাত করেই মাথায় এলো বঙ্গবন্ধু–কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিজের হাতে নকশা করা একটি আসবাব উপহার দেবেন। এরপর দীর্ঘ নয় মাস খেটে-খুটে একটি খাট তৈরি করলেন তিনি।

প্রায় দেড় লাখ টাকা ব্যয়ে ওই খাটে জাতীয় পতাকা, বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি, আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকা, গোপালগঞ্জের সংসদীয় আসনের নম্বর, বঙ্গবন্ধুর নাম বাংলা ও আরবিতে লেখা ছাড়াও আরও অনেক নকশা রয়েছে। তবে দুঃখের ব্যাপার হলো গত দুই বছর ধরে এই খাট তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানোর চেষ্টা করছেন, কিন্তু পারছেন না।

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার উত্তর হরিণা গ্রামের বাসিন্দা আবুল কাশেম। দুই সন্তানসহ চারজনের সংসার তার। মাসিক আয় খুব বেশি না হলেও বঙ্গবন্ধু–কন্যার উপহার তৈরিতে কোনোরকম কার্পণ্য করেননি তিনি।

সাত ফুট দৈর্ঘ্য ও ছয় ফুট প্রস্থের খাটে পুরোটাই সেগুন কাঠ ব্যবহার করা হয়েছে। আর এটা তৈরিতে নিজের পরিশ্রমের টাকা ছাড়াও পৈতৃক জমি বিক্রি এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা থেকে ঋণ নিয়েছেন আবুল কাশেম।

বর্তমানে খাটটি লোহাগাড়া উপজেলা পরিষদসংলগ্ন ফয়েজ শফি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে রাখা আছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেব প্রসাদ বড়ুয়া প্রতিদিন খাটটির দেখাশোনা করেন।

তবে এখন পর্যন্ত খাটটি শেখ হাসিনার কাছে পাঠাতে পারেননি বলে খুব হতাশ আবুল কাশেম। এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খোরশেদ আলম চৌধুরীও তাদের অক্ষমতার কথা জানান। এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাহাবুব আলম জানান, খাটটি জায়গা মতো পৌঁছানো নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে।