রোহিঙ্গাদের অবশ্যই ফিরিয়ে নিতে হবে, মন্তব্য মার্কিন মন্ত্রীর

মিয়ানমারকে অবশ্যই রোহিঙ্গাদের নিরাপদে তাদের বাড়িঘরে ফিরিয়ে নিতে হবে বলে জোর মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সফররত মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের জনসংখ্যা, শরণার্থী ও অভিবাসনবিষয়ক ভারপ্রাপ্ত সহকারী মন্ত্রী সাইমন হেনশ। তিনি বলেছেন, ‘এটাই সংকটের সর্বোত্তম সমাধান। এ ব্যাপারে নেপিদোর (মিয়ানমারের রাজধানী) ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।

শনিবার, ৪ নভেম্বর গুলশানের আমেরিকান ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী (মার্কিন) রেক্স টিলারসনের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি দেখতে এখানে এসেছি। সামগ্রিকভাবে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র।'

গত সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে ৭২তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা হিসেবে ২৬২ কোটি ৩০ লাখ টাকা (৩২ মিলিয়ন ডলার) দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় যুক্তরাষ্ট্র। শনিবারের সংবাদ সম্মেলনেও এর পুনরাবৃত্তি করে সাইমন হেনশ বলেন, ‘অন্যান্য দেশও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এই সংকট উত্তরণে আমাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।’

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ও ভূমিকার বিষয়ে বাংলাদেশ সফররত এই মার্কিন মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ সরকার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গেও এ ব্যাপারে আলোচনা করেছি। শরণার্থী শিবিরগুলোর পরিস্থিতি নিয়ে তাদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে।

গত শুক্রবার দুপুরে তিনি কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। তিনি ক্যাম্পের সার্বিক পরিস্থিতি দেখেন এবং রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলার পর শনিবার ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘রাখাইনের এই সমস্যা একটি জটিল ও মারাত্মক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। দুই মাসে পালিয়ে আসা ছয় লাখ মানুষকে বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়েছে। বিপুল সংখ্যক মানুষের একসঙ্গে পালিয়ে আসা নিঃসন্দেহে একটি গুরুতর বিষয়। বিষয়টি নিয়ে আমরা একাধিক বার মিয়ানমারের সঙ্গে কথা বলেছি। সেখানে নিরাপত্তার বিষয়টি উঠে এসেছে।’

রোহিঙ্গাদের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সাইমন হেনশ বলেন, বহু শরণার্থী শিবির পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা আমার রয়েছে। কিন্তু এখানকার পরিস্থিতি ভয়াবহ ও বেদনাদায়ক। শরণার্থীদের খাবার ও আশ্রয়ের সমস্যা রয়েছে। ছয় লাখ মানুষ ভয়ানক পরিস্থিতিতে রয়েছেন। এর থেকে উত্তরণের জন্য মিয়ানমারকে অবশ্যই নিরাপদ ও স্থিতিশীল পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে; যাতে রোহিঙ্গারা তাদের বাড়িঘরে ফিরে যেতে পারে।

বাংলাদেশ সফর শেষে মার্কিন প্রতিনিধিদলটি একইভাবে মিয়ানমার সফর করবে। তারা মিয়ানমারের সাথে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের সসম্মানে ও নিরাপদে রাখাইনে প্রত্যাবাসন-প্রক্রিয়া নিয়ে কথাবলার পাশাপাশি রাখাইনে শর্তহীনভাবে ত্রাণ সংস্থা ও সংবাদকর্মীদের প্রবেশের অনুমতি দেয়ার বিষয় দেশটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলবেন।