খালেদা জিয়া: আমি নির্দোষ

দুর্নীতির দুই মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে গিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘আমি নির্দোষ’। আজ বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ আদালতে ষষ্ঠ বারের মতো বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপি নেত্রী বলেন, আত্মপক্ষ সমর্থনে আমি আরও কিছুদিন বক্তব্য দিতে চাই। আমি প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় ট্রাস্টের তহবিলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম এমন কোনও বক্তব্য রাষ্ট্রপক্ষের কোনও সাক্ষী দেয়নি। আমার বিরুদ্ধে দুটি অনুসন্ধান করা হয়। অনুসন্ধানে আপনি (বিচারক) দেখতে পাবেন এই দুটি রিপোর্ট দুই ব্যক্তির হলেও বাক্য ও শব্দচয়ন অভিন্ন।

তিনি বলেন, ট্রাস্টের সঙ্গে আমার কোনও সম্পৃক্ততা নেই, তা সত্ত্বেও দুদক কর্মকর্তা আমার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। টাকার উৎস সম্পর্কে কোনও তথ্যপ্রাপ্তি ছাড়াই এজাহার রুজু করেছেন। আমাকে ও আমার রাজনৈতিক দলকে সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে তিনি মিথ্যা তথ্য এজাহারে উল্লেখ করেছেন, বক্তব্য দিয়েছেন। আর তার এই মিথ্যা বক্তব্যের সূত্র ধরে একটি রাজনৈতিক দল আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে চলেছে।

খালেদা জিয়া বলেন, ‘২০০৮ সালের ২৫ জুন সোনালী ব্যাংকের সাবেক ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মো. আজিজুল হককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়- এই মর্মে প্রথম অনুসন্ধানী রিপোর্ট করা হয়। কিন্তু দ্বিতীয় অনুসন্ধানী রিপোর্টে আজিজুলের নাম কেটে মফিজুলের নাম বসানো হয়।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা, বাদী ও অনুসন্ধানকারী হারুন অর রশিদকে একজন অতি উৎসাহী ও আওয়ামী লীগ সরকারের আজ্ঞাবহ উল্লেখ করে তিনি বলেন, তিনি নিরপেক্ষ অনুসন্ধান না করে নিজেই দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে একটি অসত্য রিপোর্ট দাখিল করে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। ফলে এই সাক্ষীর সাক্ষ্য আইনের দৃষ্টিতে অগ্রহণযোগ্য।

খালেদা জিয়া বলেন, ‘হারুন অর রশীদ ২০০৫ সালে চাকরিচ্যুত হওয়ার কারণে তিনি আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। এ কারণেই তাকে আমার বিরুদ্ধে কাজে লাগানোর জন্য বেছে নেওয়া হয়। তিনি স্বার্থন্বেষী মহলের ইচ্ছা ও নির্দেশনা অনুযায়ী আমার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান ও তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি আমার বিরুদ্ধে অসত্য সাক্ষ্য প্রদান করেন। তিনি আমার বিরুদ্ধে আদালতে যে সাক্ষ্য দিয়েছেন তা ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

খালেদা জিয়ার বক্তব্যের পর মামলার কার্যক্রম যথারীতি আগামী বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) পর্যন্ত মূলতবি রাখেন আদালত।