রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সবচেয়ে বেশি সাহায্য করছে তুরস্ক

তুরস্ক রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সবচেয়ে বেশি সাহায্য করছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক সহায়তায় সবচেয়ে বেশি সাহায্য দিয়েছে তুরস্ক।’ 

তিনি বলেন, রোহিঙ্গা শিবিরে তুর্কি উপ-প্রধানমন্ত্রী রিসেপ আকন্দ আরও ৫ হাজার ঘর তৈরি করে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এর আগে ২০ হাজার ঘর করে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছিল তারা। অর্থাৎ তুরস্ক রোহিঙ্গা শিবিরে ২৫ হাজার ঘর তৈরি করে দেবে, যাতে ১ লাখ ২৫ হাজার শরণার্থীর বাসস্থান নিশ্চিত হবে। এছাড়াও ১০টি মেডিকেল সেন্টার করে দেবে তারা।

তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনাদলু এজেন্সিকে ইস্তাম্বুলে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বর্তমানে তুরস্ক সফর করছেন। 

ত্রাণমন্ত্রী আরও উল্লেখ করেন, ‘ রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় TIKA (টার্কিশ কো-অপারেশন অ্যান্ড কো-অর্ডিনেশন এজেন্সি) শরণার্থী শিবিরে রান্নাঘর করেছে। তারা প্রতিদিন ২০ হাজার শরণার্থীকে ফ্রি খাবার দিচ্ছে।’

তুরস্ক ও বাংলাদেশ সবসময় পরস্পরের ভালো বন্ধু উল্লেখ করে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, ‘আমরা তুরস্কের সঙ্গে সবসময় ভালো সম্পর্ক বজায় রেখেছি। তবে তুর্কি ফার্স্ট লেডি এমিনি এরদোয়ান কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করার পর রোহিঙ্গা ইস্যু আন্তর্জাতিক ইস্যুতে পরিণত হয়। এটি দুই দেশের সম্পর্কে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে।’

বাংলাদেশে আসছেন তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী: মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, ‘আগামী সপ্তাহে তুর্কি প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরম বাংলাদেশ সফর করবেন। ওই সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা হবে। সেখানে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

সাক্ষাৎকারে ত্রাণমন্ত্রী মিয়ানমারের সেনাদের বর্বরতায় পালিয়ে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের সাহায্যে এগিয়ে আসা প্রথম দেশ হিসেবে তুরস্কের প্রতি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

তুরস্কের শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শনে মায়া: তুরস্কে আশ্রয় নেয়া সিরিয়ান শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেন মায়া। তিনি যে ক্যাম্প পরিদর্শন করেন সেখানে ২৬ হাজার বাসভবন তৈরি করে দিয়েছে তুর্কি সরকার। এছাড়া শরণার্থী শিবিরে তুর্কি সরকার প্রদত্ত শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় তিনি মুগ্ধ হন। তিনি বলেন, এই মডেলে শরণার্থী শিবির করার তুর্কি প্রস্তাবে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ।

দুর্যোগ মোকাবেলায় তুরস্ককে পাশে চায় বাংলাদেশ: ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, বাংলাদেশ ও তুরস্ক আগামী দিনে প্রাকৃতিক দুর্যোগে পারস্পরিক দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করবে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে দুই শতাধিক নদী রয়েছে।  বিগত দিনে আমরা বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করেছি। ঘূর্ণিঝড়, বন্যা ও ঝড়বৃষ্টির মোকাবেলায় আমরা চাই দুই দেশের বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অভিজ্ঞতা বিনিময় হোক।’

তথ্যসূত্র: আনাদলু এজেন্সি