সাঈদ খোকন: আমাদের একটা জুটি ছিল, তা ভেঙে গেলো

আমাদের একটা জুটি ছিল। তা ভেঙে গেছে। শনিবার দুপুরে বনানীর ৩২ নম্বর সড়কে ডিএনসিসি মেয়র আনিসুল হকের মরদেহ দেখতে এসে অশ্রুভেজা কণ্ঠে কথাগুলো বলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র (ডিএসসিসি) মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।

তিনি বলেন, আনিসুল হক সবসময় আমার পাশে বড় ভাই হিসেবে ছিলেন। আর কেউ আমাকে কখনও বড় ভাইয়ের মতো পরামর্শ দেবেন না। আজ থেকে আমি বড় একা হয়ে গেলাম।

এখন আমার কাছে সবকিছু অন্ধকার মনে হচ্ছে মন্তব্য করে সাঈদ খোকন বলেন, আমি একা হয়ে গেছি। আমরা উভয়ে মিলে আধুনিক ঢাকা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলাম। অনেক কাজও করেছি। স্বপ্নও দেখেছি। জানি না ভবিষ্যতে সেই স্বপ্নের কী হবে।

এর আগে শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মেয়রের মরদেহ বহনকারী বিমানটি সিলেটে এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। এরপর দুপুর ১টার দিকে ফ্লাইটটি ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসে। পরে সেখান থেকে দুপুর ১টা ২০ মিনিটের দিকে মরদেহ বনানীতে তার নিজ বাসায় নেয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মরদেহ দেখতে এবং শোকার্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে বনানীর ২৩ নম্বর সড়কের আনিসুল হকের বাড়িতে দুপুর ১টা ৫২ মিনিটে গিয়ে পৌঁছান। এরপর বেলা ৩টার দিকে মরদেহ আর্মি স্টেডিয়ামে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সাধারণ মানুষকে প্রিয় মেয়রের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য কিছুসময় মরদেহ রাখা হয়। এরপর বিকেল সোয়া চারটার দিকে মেয়রের জানাজায় অংশ নেন মন্ত্রী, এমপিসহ রাজনৈতিক, ব্যবসায়িক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের ব্যক্তিবর্গ, সাধারণ জনগণ মিলে অসংখ্য মানুষ।

১৯৫২ সালে নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন আনিসুল হক। তাঁর শৈশব কেটেছে ফেনীর সোনাগাজীর নানাবাড়িতে। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি বিভাগে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। স্ত্রী রুবানা হক, দুই মেয়ে ও এক ছেলে রেখে তিনি পরলোক গমন করেন।

গত ২৯ জুলাই নাতির জন্ম উপলক্ষে সপরিবারে লন্ডনে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন মেয়র আনিসুল হক। গত ৪ আগস্ট লন্ডনের একটি হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে পরীক্ষা নিরীক্ষা চলাকালেই সংজ্ঞা হারান মেয়র। এরপর সেখানকার চিকিৎসকরা তার মস্তিস্কের রক্তনালীতে প্রদাহজনিত সেরিব্রাল ভাসকুলাইটিস শনাক্ত করেন। এরপর বেশ কয়েকবার শারীরিক অবস্থার উন্নতির খবর শোনা গেলেও শেষ পর্যন্ত ফিরতে পারলেন না সকলের প্রিয় এই মানুষটি।