স্মরণকালের সবচেয়ে বড় পরিসরে অমর একুশে গ্রন্থমেলা

শুরু হতে যাচ্ছে বাঙালির প্রাণের মেলা অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৮। বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান মিলিয়ে প্রায় ৫ লাখ বর্গফুট জায়গায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় পরিসরের মেলা। এবার একুশে গ্রন্থমেলা চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।

আগামী বৃহস্পতিবার, ১ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাসব্যাপী এই বইমেলার উদ্বোধন করবেন। বিগত যেকোন সময়ের চাইতে বড় পরিসরে বলে এবার মেলায় থাকছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কর্তৃপক্ষ বলছে, মেলায় কোনো ধরনের ব্যাগ নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না।

জানা গেছে, অমর একুশে গ্রন্থমেলার এবারের আয়োজনে ২২-২৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে ২ দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রদান করা হবে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০১৭। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেয়া হবে বাংলা একাডেমি কর্তৃক প্রকাশিত 'আলোকচিত্রে বাংলা একাডেমির ইতিহাস এবং বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ: বহুমাত্রিক বিশ্লেষণ' শীর্ষক বই।

মঙ্গলবার বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এক লিখিত বক্তব্যে মেলার বিস্তারিত তুলে ধরেন মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও বাংলা একাডেমির পরিচালক ড. জালাল আহমেদ। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির সচিব মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, জনসংযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগের পরিচালক কুমার ব্যানার্জি, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খানসহ আরো অনেকে।

এবার মেলার বাংলা একাডেমি চত্বর উৎসর্গ করা হয়েছে সদ্য প্রয়াত কথাসাহিত্যিক শওকত আলীকে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ১১টি অংশ থাকছে ১১ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির নামে। মেলায় একাডেমি প্রাঙ্গণে থাকবে ৯২টি প্রতিষ্ঠানের ১৩৬টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৩৬৩টি প্রতিষ্ঠানের ৫৮৩টি ইউনিট। সবমিলিয়ে মোট ৪৫৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৭১৯টি ইউনিট এবং বাংলা একাডেমিসহ ২৪টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে মোট ১৫ হাজার ৫৩৬ বর্গফুট আয়তনের ২৫টি প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

এবারের বইমেলায় বাংলা একাডেমিসহ মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে ২৫ শতাংশ কমিশনে বই বিক্রি করার কথা বলা হয়েছে। গ্রন্থমেলায় টিএসসি, দোয়েল চত্বর দিয়ে থাকবে দুটো মূল প্রবেশপথ। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে থাকবে তিনটি পথ এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ ও বাইরের জন্য পথ থাকছে ৬টি।

মেলার নিরাপত্তার সার্বিক নিরাপত্তায় প্রবেশ ও বাহিরপথে থাকছে পর্যাপ্তসংখ্যক আর্চওয়ের ব্যবস্থা। পুলিশ, র‌্যাব, আনসার, বিজিবি ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নিরাপত্তাকর্মীরা নিরাপত্তা প্রদানে কাজ করবেন। মেলায় প্রাঙ্গনে থাকছে ২৫০ ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা। এবারের গ্রন্থমেলা পলিথিন ও ধূমপানমুক্ত থাকবে বলেও জানানো হয়েছে।

মেলা ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে আর ছুটির দিনে মেলা প্রাঙ্গন খুলে দেওয়া হবে সকাল ১১টায়। তবে ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে মেলা চলবে সকাল ৮টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত।