সৌদি নারীদের বোরকা পরতে হবে না: ধর্মীয় নেতার ফতোয়া

রক্ষণশীল ইসলামের অনুসারী সৌদি আরবের মেয়েদের ‘আবায়া’ বা বোরকা পরতেই হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই বলে ফতোয়া দিয়েছেন দেশটির একজন শীর্ষ ধর্মীয় নেতা। বয়েজ্যোষ্ঠ শেখ আবদুল্লাহ আল মুতলাক বলেছেন, বোরকার কোন দরকার নেই। মেয়েদের আব্রু বজায় রেখে পোশাক পরলেই চলবে।

ইসলামের পবিত্র ভূমি সৌদি মেয়েরা মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢাকা থাকে এমন যে বিশেষ ধরণের ঢিলেঢালা পোশাকটি পরিধান করে থাকে, তাকে আবায়া বলে। তা দেখতে অনেকটা বাংলাদেশের মুসলিম মেয়েদের ব্যবহৃত বোরকার মতো।

দেশটিতে ‘আবায়া’ পরার আইনি বাধ্যতামূলক থাকার কারণে প্রায় সকল নারীই এটি ছাড়া ঘরের বাইরে বের হন না। কিন্তু সৌদি ‘কাউন্সিল অব সিনিয়র স্কলারস’ বা বয়েজ্যোষ্ঠ চিন্তাবিদ কাউন্সিলের এই সদস্য বলছেন, এটার দরকার নেই।

সৌদি মধ্যপন্থার ইসলামের দিকে ধাবিত হবে- যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানের এমন ঘোষণার পর দেশটির অন্যতম শীর্ষ আলেম শেখ আবদুল্লাহ আল মুতলাক বলেন, মেয়েদের আব্রু বজায় রেখে পোশাক পরতে হবে, তার মানে এই নয় যে, ‘আবায়া’ পরতে হবে। এটি না পরলেও চলবে।

সৌদি আরবের সমাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারের চেষ্টা নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই শীর্ষ ধর্মীয় নেতার এই নতুন ফতোয়া ধর্মীয় পণ্ডিতদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। শুক্রবার শেখ আবদুল্লাহ আল মুতলাক বলেন, মুসলিম দেশগুলোর ৯০ ভাগ মহিলাই ‘আবায়া’ পরেন না। সুতরাং আমাদের মেয়েদের এটা পরতে বাধ্য করা ঠিক হবে না।

সম্প্রতি স্টেডিয়ামে গিয়ে সৌদি মেয়েদের খেলা এবং গাড়ি চালানোর অনুমতি দেয়া হয়। এ নিয়েই ঢের বিতর্ক দেখা গেছে সে দেশের ও অন্যদেশের ধর্মীয় মহলে।

ইসলামে পর্দা ফরজ হওয়ায় এটি শিথিল করার পক্ষে মত আসায় ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অনলাইনে তীব্র বিতর্ক এবং আলোচনার ঝড় বাইছে। কেউ এর পক্ষে, আবার কেউ বিপক্ষে মত দিচ্ছেন।

অনেকে লিখেছেন, যদি এমন শত শত ফতোয়াও জারি করা হয় তারপরও আমি আমার আবায়া ব্যবহার ছাড়বো না। এ জন্য যদি আমার মৃত্যুও হয়। হে মেয়েরা, তোমরা এই ফতোয়ায় কান দিও না।

মাশারি ঘামদি নামে একজন টুইটারে লিখেছেন, আবায়া আমাদের অঞ্চলের একটা ঐতিহ্য। এটি কোন ধর্মীয় ব্যাপার নয়।

উল্লেখ্য, সৌদি নারীরা আবায়া ছাড়া বাইরে বের হলে ধর্মীয় পুলিশ ভর্ৎসনা করে। ২০১৬ সালে দেশটির রাজধানী রিয়াদের রাস্তায় এক মহিলা আবায়া খুলে ফেলার পর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।