আপনি পড়ছেন

চট্টগ্রামে চাঞ্চল্যকর মাহমুদা খানম মিতু হত্যার দুই বছরেও এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উৎঘাটন করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কার নির্দেশে, কেন মিতুকে হত্যা করা হয়েছিল, সেই প্রশ্নের উত্তর না পেলেও আজকালের মধ্যেই আদালতে এ চাঞ্চল্যকর মামলার অভিযোগপত্র দিতে যাচ্ছে তদন্ত সংস্থা।

mitu killing

এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (উত্তর) মো. কামরুজ্জামান বলছেন, তাদের তদন্ত প্রায় শেষ এবং ‘ভালো অগ্রগতি’ আছে। শিগগিরই চার্জশিট আদালতে জমা দেয়া হবে।

২০১৬ সালের ৫ জুন চট্টগ্রাম মহানগরীর জিইসি’র মোড়ে পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যাকাণ্ড ঘটে। এর এক মাসের মধ্যে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার হওয়া দুজন পুলিশের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। কিন্তু যাকে পুলিশ ওই হত্যাকাণ্ডের ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ বলছে, সেই কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুছা এবং ‘হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেয়া’ কালুর হদিস গত ২ বছরেও পায়নি পুলিশ।

মুছা ও কালু বাদে সব আসামি গ্রেপ্তারের তথ্য তুলে ধরে সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহার বলেন, ‘যেটুকু ব্যর্থতা আছে তা উৎরে উঠার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করছি। হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ উদঘাটনে মুছাকে পাওয়াটা আমাদের জন্য বেশি প্রয়োজন ছিল, এ জন্য আমরা এতোদিন অপেক্ষা করছি।’

তিনি বলেন, ‘দুই বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেছে, খুব বেশিদিন অপেক্ষা করাটা সমীচীন হবে না। যেহেতু চার্জশিট দিতে হবে, আমরা চাচ্ছি শিগগিরই এ মামলা নিষ্পত্তি করতে, বলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।’

এদিকে তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন আঙুল তুলেছেন জামাতা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের দিকে।

বাবুলের অন্য দুই নারীর সঙ্গে সম্পর্কের যে অভিযোগ মিতুর পরিবার থেকে করা হচ্ছে সে বিষয়ে পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার বলেন, ‘এমন নয় যে, যেটি এ হত্যাকাণ্ডের সাথে সংশ্লিষ্ট সেটিকে গুরুত্ব না দিয়ে মিতু হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করা হয়েছে।’

তবে মিতু হত্যার তদন্তে এখনও বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানান ইকবাল বাহার।

সুত্র জানায়, এই খুনের মামলায় নিহত মিতুর স্বামী বাবুল আক্তারকে আসামি করতে তার শ্বশুর পরিবার অনেক চেষ্টা করলেও অবশেষে বাবুল আক্তারকে মামলার বাদী হিসেবে উল্লেখ করেই রিপোর্ট চূড়ান্ত করা হয়েছে।

পুলিশের একাধিক সূত্রে জানায়, এই হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড পালাতক মুছাকে প্রধান আসামি করেই প্রস্তুত করা হয়েছে রিপোর্ট। রিপোর্টে এই মামলার অধিকাংশ আসামিকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বাবুল আক্তার এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে বাবুল আক্তারকে আসামি করা হয়নি। তাকে মামলার বাদী হিসেবে উল্লেখ করার পাশপাশি স্বাক্ষীও করা হয়েছে।

এবিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি কামরুজ্জামান বলেন, ‘চূড়ান্ত রিপোর্ট অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে জমা দেয়া হবে। রিপোর্ট জমা দেয়ার পরই আপনার মিতুকে কেন হত্যা করা হয়েছে, কে হত্যা করেছে, কি কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে, হত্যাকাণ্ডে জড়িত মূল আসামি মুছা কোথায় আছে, শ্বশুর পক্ষের অভিযোগের পরও মামলায় বাবুল আক্তারকে আসামি করা হয়নি কেন? এই মামলার সব বিষয় জানতে পারবেন। এসব প্রশ্নের উত্তর চূড়ান্ত রিপোর্টে আছে। আপনারা একটু অপেক্ষা করেন সব জানতে পারবেন।’

মঙ্গলবার ৫ ই জুন আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট জাম দেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দিতেও পারি আবার নাও দিতে পারি।’

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানার ও আর নিজাম রোডে দুর্বত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় তৎকালীন পুলিশের এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানক মিতু। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

হত্যাকাণ্ডে চারদিন পর ৮ জুন নগর গোয়েন্দা পুলিশ হাটহাজারি উপজেলা থেকে আবু নসুর গুন্নু ও ১১ জুন বায়েজিদ বোস্তামী থানার শীতল ঝর্ণা থেকে শাহ জামান ওরফে রবিন নামে দু’জনকে গ্রেপ্তার করে। একই মাসের ২৬ তারিখ মো. আনোয়ার ও মো. মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম নামে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপরই হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রের যোগানদাতা এহেতাশামুল হক ভোলা ও তার সহযোগী মো. মনিরকে পয়েন্ট ৩২ বোরের একটি পিস্তলসহ গ্রেপ্তার করা হয়।

এরপর ১ জুলাই মোটরসাইকেল সরবরাহ করার অভিযোগে মুছার ভাই সাইদুল আলম শিকদার ওরফে সাক্কু ও শাহজাহান নামে দু’জনকে গ্রেপ্তা্র করা হয়। এদের মধ্যে আবু নসুর গুন্নু শাহ জামান ওরফে রবিন ও সাইদুল জামিনে আছেন। তবে হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি কামরুল সিকদার মুছাকে এখনও গ্রেপ্তার করা যায়নি। ইউএনবি।

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.