সুস্থ আছি, নিজেই বললেন ম্যারাডোনা

জিতলে টিকতে পারে বিশ্বকাপে থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা। কিন্তু হারলে সরাসরি বিদায়। এমন সমীকরণ নিয়ে মঙ্গলবার রাতে মাঠে নামে আর্জেন্টিনা। প্রতিপক্ষ নাইজেরিয়া। স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচের উত্তেজনা ছিলো তুঙ্গে। যে উত্তেজনা লিওনেল মেসি-হাভিয়ের মাশচেরানাদের মতো ছুঁয়ে গেছে তাদের ‘গুরু’ দিয়েগো ম্যারাডোনাকেও। কে জানে, মেসিদের তার উত্তেজনাই হয়তো বেশি ছিলো!

ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদলের ম্যাচটি আর্জেন্টিনা জিতেছে ২-১ গোলের ব্যবধানে। এ জয়ের পর ম্যারাডোনা উদযাপন করেছেন পাগলের মতো। দুই হাতের মধ্যমা দেখিয়েছেন সমালোচকদের। গলা ফাটিয়েছেন শিশুদের মতো। নিজের আসন থেকে লাফিয়ে উঠেছেন কখনো। দুই হাত প্রসারিত করে আকাশে উড়ে যাওয়ার ভঙিমা করেছেন। চোখ বন্ধ করে শির উঁচু করে বুক ভরে নিয়েছেন নিঃশ্বাস। যেনো এর চেয়ে স্বস্তির আর কিছু হতে পারে না। এ সব করতে করতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। খবর বের হয়, তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।

কিন্তু ওই স্নায়ুক্ষয়ী ম্যাচের একদিন পর ম্যারাডোনা জানালেন, হাসপাতালে যেতে হয়নি তাকে। তিনি সুস্থই আছেন। নিজের সুস্থতার এই খবর ম্যারাডোনা প্রকাশ করেন ইন্সটাগ্রামে। সেখানে তিনি বলেন, ‘সবাইকে বলতে চাই, আমি সুস্থ আছি। আমার কিছু হয়নি। হাসপাতালে যাওয়ার মতোও কিছু ঘটেনি।’

ম্যারাডোনার এই কথা নিঃসন্দেহে পৃথিবীজুড়ে ছড়িয়ে থাকা তার ভক্তদের দিচ্ছে দারুণ স্বস্তি। তিনি আরো বলেন, ‘প্রথমার্ধ শেষে আমার ঘাড়ে খুব ব্যথা করতে থাকে। এ সময় আমার চিকিৎসক এসে আমাকে পরীক্ষা করে বাসায় চলে যেতে বলেন। কিন্তু ম্যাচের ওই অবস্থায় আমি বাসায় যাই কী করে! পরে আমি মাঠে থাকার সিদ্ধান্ত নেই। আমাকে সমর্থন ও ভালোবাসার জন্য ধন্যবাদ। আমিও সবাইকে ভালোবাসি।’

নাইজেরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের একদিন আগে মেসিদের অনুপ্রাণিত করতে দলের ড্রেসিংরুমে যাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন ম্যারাডোনা। কিন্তু তাতে আর্জেন্টাইন ফুটবল ফেডারেশন রাজি হয়নি। তাতে অবশ্য খুব একটা রাগ করেননি এই ফুটবল মহানায়ক।

দলের ড্রেসিংরুমে গিয়ে ম্যারাডোনা যা করতে চেয়েছিলেন, নাইজেরিয়ার বিপক্ষে সেই কাজটা দারুণভাবে করেছেন লিওনেল মেসি। নিজের মুখচোরা স্বভাব পিছনে ফেলে এই ম্যাচে সত্যিকারের নেতা হয়ে উঠেছিলেন তিনি। মাঠে নামার আগে এবং প্রথমার্ধের বিরতিতে দলকে অনুপ্রাণিত করতে বক্তব্য দিতে দেখা গেছে তাকে। মেসির ওই বক্তব্য যে টনিকের মতো কাজ করেছে, তার প্রমাণ তো দিচ্ছে ম্যাচের ফলই।