ইতিহাস গড়তে পারবেন কি বেলজিয়ামের এই তেজী ঘোড়া?

টোয়েন্টিফোর লাইভ নিউজপেপারের 'রুমেলু লুকাকু: সিনেমাকেও হার মানানো এক জীবনের গল্প' প্রতিবেদনের সৌজন্যে বেলজিয়ামের এই তেজী ঘোড়ার জীবনের গল্প নিশ্চয়ই সবার জানা। বেলজিয়ামের ছোট্ট শহর এনটর্পের রাস্তা থেকে উঠে আসা এই ফুটবলার হতে চেয়েছেন দেশটির ইতিহাসের সেরা ফুটবলার। আজই হয়তো সেই সুযোগ পেতে পারেন লুকাকু। তার দিকে তাকিয়েই ফ্রান্স বধের স্বপ্ন দেখছে বেলজিয়াম।

রাশিয়া বিশ্বকাপে গোল্ডেন বুটের অন্যতম দাবিদার বেলজিয়ামের এই তারকা স্টাইকার। ইতোমধ্যে বিশ্বকাপে পাঁচ ম্যাচে করেছেন চার গোল। তার সামনে ছয় গোল নিয়ে সবার উপরে আছেন ইংল্যোন্ডের হ্যারি কেন। সেমি ফাইনালে খেলা দলগুলো সামনে আরো দুটি খেলা আছে। কাজেই লুকাকু জ্বলে উঠলেই জমে উঠবে গোল্ডেন বুটের লড়াই। প্রায় ৮ বছর আগে বেলজিয়াম জাতীয় দলে অভিষেক হওয়ার পর এখন পর্যন্ত দেশের হয়ে ৭৩ ম্যাচে ৪০ গোল করেছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের এ স্ট্রাইকার।

কোয়ার্টার ফাইনালে হট ফেভারিট ব্রাজিলকে কাঁদিয়ে সেমিফাইনালে ওঠার পেছনের নায়ক কিন্তু এই লুকাকু। ডি ব্রুইনের গোলটিতে পুরো অবদান দ্রুত গতির এই স্ট্রাইকারের। লুকাকু ছাড়াও বেলজিয়ামের মাঝ মাঠে আছেন হ্যাজার্ড। কাজেই এই দুজনের রসায়ন জমে উঠলেই বিপদ হতে পারে ফ্রান্সের।

ফুটবল বিশ্লেষকরা বলছেন, 'ফ্রান্স ও বেলজিয়ামের মধ্যকার জয়ী দলটিই ফাইনালের ফেভারিট।' অন্যদিকে ইংল্যান্ডের পক্ষেও বাজি ধরার লোকের অভাব নেই। তবে বেলজিয়াম তাদের ফুটবল ইতিহাসে কখনো ফাইনাল খেলেনি। ১৯৮৬ সালে সর্বশেষ সেমিফাইনালে খেলেছিল তারা। তাইতো এমন সুযোগ বারবার আসে না বলে অভিব্যক্তি তুলে ধরছেন বেলজিয়ামের খেলোয়াড়রা।

টানা ২৩ ম্যাচ ধরে অপরাজিত রবের্তো মার্তিনেসের দল। সর্বশেষ ২০১৬ সালে ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ওয়েলসের বিপক্ষে হেরেছিল তারা। এছাড়াও এখন পর্যন্ত রাশিয়া বিশ্বকাপে দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৪টি গোল করেছে বেলজিয়ামরা। আর জাতীয় দলের হয়ে শেষ ১৩ ম্যাচে ১৭টি গোল করেছেন লুকাকু আর ৩টি গোলে রেখেছেন উল্লেখযোগ্য অবদান।

বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায় মুখোমুখি হবে বেলজিয়াম ও ফ্রান্স। তবে পরিসংখ্যানের বেশকিছু তথ্য অবাক করবে আপনাকে। ইউরোপের প্রতিবেশী দুই রাষ্ট্র বেলজিয়াম ও ফ্রান্সের মুখোমুখি হয়েছে ৭৩ বার। যেখানে ফরাসিরা জয় পেয়েছে ২৪টি আর বেলজিয়াম জয় পেয়েছে ৩০টি। বাকি ১৯টি ম্যাচ ড্র। কাজেই বলা যায় না, বেলজিয়ামের ইতিহাসে হয়তো জায়গা করে নিতে পারেন লুকাকু-হেজার্ড-ডি ব্রুইনরা।

এক সাক্ষাতকারে লুকাকু বলেন, 'আমি সব সময়ই বেলজিয়ান ইতিহাসের সেরা ফুটবলার হতে চেয়েছি। ভালো ফুটবলার নয়, গ্রেট ফুটবলারও নয়। এটাই ছিলো আমার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য। প্রচণ্ড রাগ নিয়ে আমি প্রতিটি খেলায় অংশগ্রহণ করেছি। খেলার সময় আমার মাথায় থাকতো, আমাদের সারা ঘরময় ইঁদুরেরা ছোটাছুটি করে… একটা টিভির অভাবে আমি চ্যাম্পিয়নস লীগ দেখতে পারি না… কেনো অন্যান্য গার্ডিয়ানরা আমার দিকে এমন অদ্ভুতভাবে তাকায়…।' তবে কি দেশটির ইতিহাসের সেরা ফুটবলার হওয়ার মঞ্চ তৈরি হচ্ছে রাশিয়ার সেন্ত পিটার্সবুর্গে?