ওজিলের পাশে সানিয়া মির্জা

রোববার গোটা ফুটবল দুনিয়াকে অনাকাঙ্ক্ষিত এক  বিস্ময় উপহার দিয়েছেন মেসুত ওজিল। জার্মান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট রেইনহার্ড গ্রিনডেলের বিরুদ্ধে বর্ণবৈষম্যের অভিযোগ এনে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন এই মিডফিল্ডার। বিদায়বার্তায় জার্মান ফুটবলের প্রধানকর্তাকে রীতিমতো ধুয়ে দিয়েছেন ওজিল।

তবে সোমবার বিশ্বজয়ী মিডফিল্ডারের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে দেশটির ফুটবলের সর্বোচ্চ সংগঠন। ওজিলের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ তুলেছে তারা। পক্ষে-বিপক্ষে অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ- এনিয়ে এখন তোলপাড় ফুটবল বিশ্ব। এমন অবস্থায় ওজিলের পাশে এসে দাঁড়ালেন ভারতীয় টেনিস সেনসেশন সানিয়া মির্জা।

জার্মানিকে বিদায় বলার পাশাপাশি গ্রিনডেলের ওপর ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন ওজিল। আর্সেনাল তারকার কন্ঠে সুর মেলালেন ভারতের টেনিস সম্রাজ্ঞী সানিয়াও। সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে ওজিলের অবসরপত্র পোস্ট করার পাশাপাশি একটি টুইট বার্তা দিয়েছেন এই টেনিসকন্যা।

টুইটারে ভারতের টেনিস সেনসেশন বলেছেন, ‘একজন ক্রীড়াবিদের জন্য এটা দুঃখজনক দিন। তার চেয়েও বড় কথা ওজিল একজন মানুষ। মেসুত ওজিল আপনি বর্ণবাদের যে অভিযোগ তুলেছেন, সেটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এটা যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে সেটা হবে খুব দুর্ভাগ্যজনক।’

ফুটবল বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়েছে চারবারের চ্যাম্পিয়ন জার্মানি। রাশিয়ার মঞ্চে এই ভরাডুবির কারণ হিসেবে জার্মান প্রধান কোচ জোয়াকিম লোর দল নির্বাচন, রণকৌশল এবং খেলোয়াড়দের বাজে পারফরম্যান্সটাই সামনে চলে এসেছে।

দলের মতো আসরটা ভালো কাটেনি ওজিলেরও। জার্মানির জার্সিতে বিশ্বকাপের ময়দানে আর্সেনাল তারকা ছিলেন নিষ্প্রভ; ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। খেলোয়াড় হিসেবে জার্মানির ব্যর্থতার দায় আছে তারও। তাই বলে পুরোটা নয়। অথচ জার্মান ফুটবল সংস্থা দলের ব্যর্থতার কারণে শুধু ওজিলকে দাঁড় করাচ্ছে কাঠগড়ায়।

তাতে রীতিমতো ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে দিলেন ওজিল। রোববার অবসর ঘোষণাপত্রে আর্সেনালের তারকা মিডফিল্ডার লিখেছেন, ‘দল জিতলে আমি হয়ে যাই জার্মানির। কিন্তু হারলে আমাকে বলা হয় অভিবাসী। এমন কথা আমাকে বহুবার শুনতে হয়েছে। জার্মানির জার্সি চাপাতে এখন আমার রুচিতেও বাধছে।’

অবশ্য ওজিলকে ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়েছে বিশ্বকাপের আগেই। গত মে মাসে লন্ডনে এক অনুষ্ঠানে তুরস্কের প্রেসডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানকে একটি জার্সি উপহার দিয়েছিলেন ওজিল। সেই মুহূর্তটা আবার ফ্রেমবন্দি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন তিনি।

বিশ্বকাপ থেকে জার্মানি ছিটকে যাওয়ার পর লন্ডনের পুরনো সেই ইস্যুটাই নতুন করে সামনে চলে এসেছে। জার্মান ফুটবল সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয় মাঠের খেলায় ওজিলের নিবেদন ছিল না, বরং রাজনৈতিক প্রচার-প্রচারণায় বেশি মনোযোগী ছিলেন তিনি।

ছেলের বিরুদ্ধে গুরুতর এই অভিযোগের পর ওজিলের বাবা মুস্তাফা তাকে জার্মানি দল থেকে সরে দাঁড়ানোর উপদেশ দেন। শেষ অবধি বাবার কথা মতোই কাজ করলেন তুর্কি বংশোদ্ভূত এই জার্মান ফুটবলার। জার্মানির জার্সি ও বুট তুলে রাখার সিদ্ধান্ত নেন ওজিল।