যোগাযোগ বাড়ানোর অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
নেপালের কাঠমান্ডুতে বিমসটেকের চতুর্থ সম্মেলনে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে যোগোযোগ বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন এর নেতারা। বৃহস্পতিবার কাঠমান্ডুর হোটেল সোয়ালটি ক্রাউন প্লাজায় সম্মেলনের উদ্বোধনী সভায় তারা এ গুরুত্বারোপ করেন।
কাঠমান্ডু পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্মেলনের উদ্বোধনী সভায় বিমসটেকের সদস্য দেশগুলোর রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা সরাসরি এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের একাধিক উপায় অন্বেষণের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।
দেড়শ কোটির মানুষের এই আঞ্চলিক জোটে পুরো বিশ্ব জনসংখ্যার ২২ শতাংশ, সম্মিলিত জিডিপি প্রায় ২.৮ ট্রিলিয়ন, আঞ্চলিক বাণিজ্য মাত্র পাঁচ শতাংশ থাকলেও সদস্য দেশগুলোর মধ্যে আরো গভীর সহযোগিতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর আলোকপাত করা হয়েছে। পাঁচ শতাংশ বাণিজ্যের মধ্যে, ভারত-থাইল্যান্ড ও থাইল্যান্ড-মিয়ানমারের মধ্যেই একটি উল্লেখযোগ্য অংশ জুড়ে রয়েছে।
উদ্বোধনী ভাষণে বর্তমান সভাপতি ও নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা দক্ষিণ এশিয়ার সাথে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোকে সংযুক্ত করার একটি অনন্য প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বিমসটেকের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন।
তিনি সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং এ সংক্রান্ত সব ধরনের বাধা দূর করার প্রতি জোর দিয়ে বলেন, ‘সংযোগ হলো এ অঞ্চলের বলিষ্ঠ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল।’
তিনি বলেন, আঞ্চলিক এই জোটটি অর্থনৈতিক গতিশীলতা ত্বরান্বিত করা এবং দেশ ও জনগণের উন্নয়ন প্রয়োজন মোকাবেলা করার একটি উপায়। সেই সাথে সামাজিক অগ্রগতি ত্বরান্বিত করা এবং সহযোগিতা ও অংশীদারিত্ব বাড়ানোর একটি মাধ্যম।
‘এটি আঞ্চলিক গোষ্ঠীর সংযোজক, সংযুক্ত দেশগুলোর একটি সমিতি যা সমাজ এবং মানুষদের সংযুক্ত করে’, বলেন তিনি।
নেপালের প্রধানমন্ত্রী সদস্য দেশগুলোতে ঐক্যবদ্ধভাবে দারিদ্র্য, জলবায়ু পরিবর্তন, ও অন্যান্য চ্যালেঞ্জের বিরুদ্ধে লড়াই করার আহ্বান জানান।
একজোট হয়ে সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলার আহ্বান জানিয়ে তিনি উল্লেখ করেন, এই অঞ্চল সন্ত্রাসবাদের বিপদমুক্ত নয়। এখানে সংগঠিত অপরাধ, মাদক পাচার, মানব পাচার এবং অর্থপাচার ক্রমাগত বাড়ছে।
বিমসটেক সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, তার দেশ নেপাল, বাংলাদেশ এবং ভুটানের সাথে ডিজিটাল সংযোগের মাধ্যমে অভিজ্ঞতা বিনিময়ে প্রতিশ্রুতির কথা জানান।
বিমসটেক দেশগুলোর মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের সবচেয়ে বড় সুযোগ উল্লেখ করে বাণিজ্য ও অর্থনীতি, পরিবহন, ডিজিটাল সংযোগ এবং মানুষের সাথে সংযোগ স্থাপনের প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন মোদি।
এদিকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রাজনীতি ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সংস্কারের মাধ্যমে বিমসটেক সদস্য দেশগুলোর সমৃদ্ধি সম্ভব।
তিনি বলেন, বিমসটেক সদস্য রাষ্ট্রকে সংস্কৃতি ও জনস্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ অগ্রাধিকার প্রদানের মাধ্যমে জনগণের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।
ভুটানের প্রধান উপদেষ্টা (অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান) দাশু তিশিরিং ওয়াংচুক সদস্য দেশগুলোকে জলবায়ু পরিবর্তন এবং এর প্রতিকূল প্রভাবের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের আহ্বান জানান। এই অঞ্চলের সাধারণ চ্যালেঞ্জ হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তনকে তুলে ধরে ওয়াংচুক বলেন, এটির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
তিনি আরো বলেন, একটি দেশের মাধ্যমে আমাদের উদ্দেশ্য অর্জন করা সম্ভব নয়। আমাদের সমস্যা সমাধান করার জন্য অঞ্চলের জনগণের মধ্যে একটি সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টা দরকার।
এদিকে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুত চ্যান-ও-চা বলেন, সংযোগ জাতীয় নীতির মূল। সহযোগিতার প্রস্তাবিত দুটি ক্ষেত্র হচ্ছে: পরিবহন সংযোগ এবং সামুদ্রিক সংযোগ।
পাইলট প্রকল্প হিসেবে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দর এবং থাইল্যান্ডের পশ্চিমে রানং বন্দর সংযুক্ত করার ক্ষেত্রে গভীর আগ্রহ দেখিয়েছে থাইল্যান্ড।
প্রসঙ্গত, ‘শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ ও স্থিতিশীল বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চল অভিমুখে’ প্রতিপাদ্য নিয়ে বৃহস্পতিবার শুরু হয় বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশনের (বিমসটেক) চতুর্থ সম্মেলন।
সংস্থার সদস্য দেশগুলোর নেতারা- বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ভুটানের প্রধান উপদেষ্টা (অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান) দাশু তিশিরিং ওয়াংচুক, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা, মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্রয়ুথ চ্যান-ও-চা দুদিনের সম্মেলনে নিজ নিজ দেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন।
শুক্রবার দুদিনের সম্মেলন শেষে বিমসটেকের সভাপতিত্ব শ্রীলঙ্কার কাছে হস্তান্তর করবে বর্তমান সভাপতির দায়িত্বে থাকা নেপাল।
১৯৯৭ সালের ৬ জুন ব্যাংকক ঘোষণার মাধ্যমে এই উপ-আঞ্চলিক সংস্থাটি গঠিত হয়। এর সাত সদস্য দেশের মধ্যে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল ও শ্রীলঙ্কা এসেছে দক্ষিণ এশিয়া থেকে এবং দক্ষিণপূর্ব এশিয়া থেকে এসেছে বাকি দুদেশ মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড। ইউএনবি।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.