নির্বাচন এবং সরকার গঠনের পর একাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী (মহিলা) আসনে কারা থাকছেন তা নিয়ে আলোচনা চলছে। গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে জয়ী এমপিরা এরই মধ্যে শপথ নিয়েছেন। গঠন করা হয়েছে মন্ত্রিসভা। ২৫৭টি আসনে জয়ী হয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করেছে। আর বিরোধী দলে থাকছে ২২টি আসনে জয়ী এইচএম এরশাদের জাতীয় পার্টি।

reserved women seats candidats 1

একাদশ জাতীয় সংসদ অধিবেশনের প্রথম অধিবেশন আগামী ৩০ জানুয়ারি শুরু হবে। অধিবেশন শুরুর আগেই সংরক্ষিত ৫০ নারী আসনের সদস্যরা নির্বাচিত হতে পারেন। দ্রুতই এ নারী আসনের নির্বাচন এবং মনোনয়ন প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানা গেছে।

জাতীয় সংসদ (সংরক্ষিত মহিলা আসন) নির্বাচন আইন, ২০০৪ অনুযায়ী-‘সংসদের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হওয়ার তারিখের পরবর্তী ত্রিশ কার্য দিবসের মধ্যে সংবিধানের ৬৫ অনুচ্ছেদের (৩) দফার অধীন সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচনের উদ্দেশ্যে নির্বাচন কমিশন সাধারণ আসনে নির্বাচিত সদস্যদের রাজনৈতিক দল বা জোটওয়ারী সদস্যদের পৃথক পৃথক তালিকা প্রস্তুত করবে।’

গত ২ জানুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদের নবনির্বাচিত এমপিদের গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পরের দিন (৩ জানুয়ারি) এমপিরা শপথ নেন। গত ৭ জানুয়ারি শপথ নেন নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা।

নির্বাচন কমিশন সংসদের কোনো সাধারণ নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রকাশের তারিখ থেকে পরবর্তী নব্বই দিনের মধ্যে সংবিধানের ৬৫ অনুচ্ছেদের (৩) দফার অধীন সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচন সম্পন্ন করবে এবং এই লক্ষ্যে সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা মনোনয়ন পত্র দাখিল, বাছাই ও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের তারিখ এবং ভোট গ্রহণের স্থান ও তারিখ নির্ধারণপূর্বক নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করবে৷

এদিকে বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এবার সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচনের জন্য আগামী সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করা হবে।

সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচনের উদ্দেশ্যে, নির্বাচন কমিশন, ধারা ৩ এর অধীন প্রকাশিত রাজনৈতিক দল ও জোটসমূহের তালিকার ভিত্তিতে প্রত্যেক তালিকার অন্তর্ভুক্ত সদস্যদের মোট আসন সংখ্যার আনুপাতিক হার অনুযায়ী এই ধারার বিধান অনুসারে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দল ও জোটের অনুকূলে সংরক্ষিত মহিলা আসনসমূহ বণ্টন করবে৷

সংসদের সাধারণ আসনে নির্বাচিত সংসদ-সদস্য হিসাবে শপথ গ্রহণকারী সকল ব্যক্তি সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচনে ভোটার হবেন। সংসদ সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হওয়ার এবং সংসদ-সদস্য থাকার জন্য সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে উল্লিখিত যোগ্যতাসম্পন্ন যেকোনো নারী সংরক্ষিত আসনে প্রার্থী হতে পারবেন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রাপ্ত আসন অনুযায়ী সংরক্ষিত ৫০টি আসনের মধ্যে ৪৩টি আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ৪টি, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ১টি এবং স্বতন্ত্র ও অন্যান্য দল মিলে ২টি আসন পাবে। তবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচিত এমপিরা এখনও শপথ নেয়নি। ফলে সংরক্ষিত নারী আসনে তাদের মনোনয়ন দেয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।

এদিকে বিরোধী দলীয় নেতা এরশাদ চারজনের একটি তালিকা করে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে চিঠি দিয়েছেন। তারা হলেন- পারভীন ওসমান (নারায়ণগঞ্জ), ডা. শাহীনা আক্তার (কুঁড়িগ্রাম), নাজমা আখতার (ফেনী) ও মনিকা আলম (ঝিনাইদহ)।

তবে নারী আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন কারা পাচ্ছেন তা এখনো জানা না গেলেও তালিকায় রয়েছেন দশম জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের কয়েকজন সংসদ সদস্য, সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রী, শিক্ষিকা, উদ্যোক্তা, অভিনেত্রী, শিল্পী ও ব্যবসায়ী। ইতিমধ্যেই তারা মনোনয়ন পেতে জোর লবিং শুরু করেছেন। আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের সাথে দেখাও করছেন।

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ইডেন কলেজ শাখার সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আইন ও বিধি উপকমিটির সদস্য ড. নুরুন্নাহার নুপুরের নাম আলোচনায় রয়েছে। ঢাকা - ৭ আসন থেকে সরাসরি নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন সংগ্রহ করলেও দলের সভানেত্রীর কথায় সরে দাঁড়ান তিনি।

এদিকে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ও মহিলা আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক, সাবেক ছাত্র নেত্রী অ্যাডভোকেট জান্নাতুল ফেরদৌস রুপার মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে আলোচনা চলছে। জান্নাতুল ফেরদৌস রুপা ওয়ান ইলেভেনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতাদের আইনি সহায়তা দেন। তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৫ আসন থেকে মনোনয়ন তুলেছিলেন। পরে দলীয় নির্দেশে তার মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন এবং বিভিন্ন এলাকার আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারণা চালান। তার এলাকার সমর্থকরা নারী আসনে মনোনয়ন দিতে জোর দাবি জানাচ্ছেন।

জানা গেছে মন্ত্রিসভার মতো সংরক্ষিত নারী আসনেও চমক দেখাতে পারে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দশম জাতীয় সংসদের কয়েকজন সদস্য পুনরায় থাকতে পারেন। এদের মধ্যে বর্তমান তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, মাহজাবিন খালেদ, সাবিনা আক্তার তুহিন, অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি, ফজিলাতুন্নেছা বাপ্পি, নূর জাহান বেগম মুক্তার নাম শোনা যাচ্ছে।

এছাড়া আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, স্বাস্থ্য উপ কমিটির সদস্য ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাঈদা শওকত জেনি, আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মারুফা আক্তার পপি, মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম ক্রিক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিরীন রোখসানা, যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার, চলচ্চিত্র অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী, অরুণা বিশ্বাস, নাট্যাভিনেত্রী শমী কায়সার ও রোকেয়া প্রাচীর নামও আলোচনায় রয়েছে। খবর: ইউএনবি।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.